শম্পালী মৌলিক: নতুন ছবিতে হাত দিতে চলেছেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। এই ছবির জন্যই ফের জুটি বাঁধছেন অনিন্দ্য আর শান্তনু মৈত্র। প্রসঙ্গত, এই ২০২০-তে অনিন্দ্যর প্রথম ছবি ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’ ৫-এ পড়ল। সেই ছবিতে অতিথি সুরকার হিসেবে যুক্ত ছিলেন শান্তনু মৈত্র। ছবির থিম মিউজিক এবং ‘বন্ধু চল’ গানটিরও সুর করেছিলেন শান্তনু। যে গান আজও অমলিন। এবার পুরোদস্তুর সংগীত পরিচালক হিসেবে শান্তনু মৈত্রকে পাশে পাচ্ছেন পরিচালক অনিন্দ্য। সঙ্গে থাকছে এই ছবিতে প্রসেনের গান। আর ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর করবেন প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেরই লেখা উপন্যাসের গল্প থেকে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের পরের ছবি তৈরি হবে।
‘প্রজাপতি বিস্কুট’-এর পর ২০১৮ সালে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা থেকে অনিন্দ্য করেছিলেন ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’। এবারে কিন্তু আর অন্যের গল্প নয়। নিজের লেখা কাহিনি নিয়েই বানাচ্ছেন তাঁর চতুর্থ ছবি ‘প্রেম-টেম’। নামেই পরিষ্কার যে আদ্যন্ত প্রেমের ছবি। আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, পরপর দু’টি ছবি ‘উইন্ডোজ’-এর সঙ্গে করার পর এই প্রথম পরিচালক হিসেবে ‘ভেঙ্কটেশ ফিল্মস’-এর সঙ্গে কাজ করতে চলেছেন তিনি।
বিষয়টা ঘটল কীভাবে? অনিন্দ্য বলছেন, “অনেকদিন ধরেই ‘এসভিএফ’-এর সঙ্গে ছবি করার কথা হচ্ছিল। প্রথম কথা হয়েছিল শ্রীকান্তদার সঙ্গে। আমি তখন আমেরিকায়। শ্রীকান্তদা ফোন করে। তারপরে ফিরে এসে কথা হয় একটা বায়োপিক করার বিষয়ে। অনেকবার মিটিংও হয়। ওই বায়োপিকটা বড় স্কেলের ছবি হত। কিন্তু ওটা করতে অনেকটা সময় লাগত। আমরা ভাবনাচিন্তা শুরুও করে দিয়েছিলাম। নানা কারণে ওটা তখন হয় না। এরপর মণিদা আমাকে বলে যে, ওটার আগে একটা অন্য ছবি যদি করা যায়, কারণ ওটা বেশ সময়সাপেক্ষ।
[আরও পড়ুন: ৬ কিমি হেঁটে প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন জওয়ানরা, প্রশংসায় পঞ্চমুখ অপর্ণা ]
তখন আমি ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর পুজো সংখ্যার জন্য একটা উপন্যাস লিখেছিলাম ‘বকলস’ বলে গত বছর। সেই গল্পটা মণিদাকে শোনাই। মণিদার পছন্দ হয়। চিত্রনাট্য করতে বলে আমাকে। আমরা কাজ শুরু করি। এটাই ‘এসভিএফ’-এর সঙ্গে প্রথম কাজ আমার। ওদের পেশাদারিত্ব এবং সুন্দর ব্যবস্থাপনা, একটা কর্পোরেট অ্যাসিস্ট্যান্সই বলব, যেটা আমার বেশ ভাল লাগছে।”
‘বকলস’ মূলত কলেজ প্রেমের গল্প। যাঁরা উপন্যাসটি পড়েছেন জানেন। তবে সিনেমার প্রয়োজনে নিজের গল্পেও কিছু যোগ-বিয়োগ করতে পারেন অনিন্দ্য। এক্ষেত্রে অনেকেরই মনে পড়তে পারে ‘চন্দ্রবিন্দু’র ‘কী আর করব বলো সখী বুঝেছি প্রেম-টেম সবই বুজরুকি’ গানটার কথা। প্রসঙ্গত এই গান অনিন্দ্যরই লেখা। ছবির নামকরণের ক্ষেত্রে হয়তো পরিচালকের ভাবনাতেও সেটা ছিল। ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’ বা ‘প্রজাপতি বিস্কুট’-এর মতোই অনিন্দ্য তাঁর নতুন ছবির জন্য ভরসা রাখছেন নতুন অভিনেতাদের ওপর। কারণ তিনি বিশ্বাস রাখেন কনটেন্টে এবং ফ্রেশ লুকে। তবে এক্ষুনি ছবির চূড়ান্ত কাস্ট ডিটেল প্রকাশ করতে চাইলেন না। জোর কদমে চলছে প্রি-প্রোডাকশনের কাজ। ছবির সিংহভাগ শুটিং হবে চন্দননগর এবং শ্রীরামপুরে।
[আরও পড়ুন: দেবের ‘গোলন্দাজ’ বাহিনিতে ইশা-অনির্বাণ, কাস্টিংয়ে রয়েছে আরও চমক! ]
এই সময়ের ভালবাসার গল্প কিন্তু এমন শুটিং লোকেশন বেছে নিলেন কেন? জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ‘এই ছবির বিষয়ের সঙ্গে লোকেশনের একটা যোগ আছে। হুগলি বন্দর খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছিল, কলকাতা তৈরি হওয়ার আগে। ওখানে ভাস্কো দা গামা এসেছিলেন। কত বিদেশি জাহাজ আসত। নৌবাণিজ্যের দিক দিয়েও বড় ঘাঁটি ছিল হুগলি। পর্তুগিজ এবং ফরাসিরা এসেছিল। ওখানে তো একসময় প্রায় সাতটা দেশের মানুষ ঘাঁটি গেড়েছিল। সেই ইতিহাস-ঐতিহ্য কিছুটা রাখা হয়েছে। কিছুটা আমাদেরই দোষে নষ্ট হয়েছে। আর একসময় চন্দননগর ছিল ফরাসি উপনিবেশ। প্রেমের গল্পের ব্যাকড্রপ হিসেবে এমন জায়গা রাখতে চেয়েছি। কারণ সেটা খুব রোমান্টিক হবে।’ ক্যামেরার দায়িত্বে থাকবেন শুভঙ্কর ভড়। বসন্তের দিন দিয়ে ছবি শুরু হবে। আর ভালবাসার দিনের আশেপাশে অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারির কাছাকাছি সময়ে ‘প্রেম টেম’-এর শুটিং শুরু হচ্ছে।
The post নিজের লেখা কলেজ প্রেমের গল্প নিয়ে অনিন্দ্যর নতুন ছবি, সঙ্গীতে সঙ্গত শান্তনু মৈত্রর appeared first on Sangbad Pratidin.