সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত এগোলেও কলকাতার রাজপথে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর টানা আন্দোলনের ছবিটা কিন্তু বদলায়নি। যতই চুনোপুঁটি থেকে রাঘব বোয়ালরা তদন্তকারীদের জালে আসুক, অবস্থান বিক্ষোভ চলছেই। হাজার আলোচনাতেও সেই জট খোলেনি। নিয়োগ করার ক্ষেত্রে আইনি বাধা রয়েছে। ফলে যোগ্যতা প্রমাণ সত্ত্বেও চাকরির নিয়োগপত্র অধরাই। আর তার প্রতিবাদে কলকাতার ধরনামঞ্চে নিজের দীর্ঘ কেশ বিসর্জন দিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থী রাসমনি পাত্র। এবার তাঁর পথেই হাঁটলেন আরেক চাকরিপ্রার্থী দেবাশিস বিশ্বাস। ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) জেলা শিক্ষা সংসদের অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ থেকে শুক্রবার তিনিও নেড়া হলেন। জানালেন, প্রতিবাদের পাশাপাশি এর নেপথ্যে আরেক উদ্দেশ্য রয়েছে। নিজের মাথার চুল (Hair) তিনি দান করবেন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের।
২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষক পদে পরীক্ষা দিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) প্রার্থী দেবাশিস বিশ্বাস। তালিকায় ১৮৩৪ জনের নাম ছিল। কিন্তু তার পর পূর্ণাঙ্গ প্যানেল প্রকাশ, ইন্টারভিউ, নিয়োগ কিছুই হয়নি। এবার সেই পূর্ণাঙ্গ প্যানেল প্রকাশ ও নিয়োগের দাবিতে এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরিপ্রার্থীরা ফের আন্দোলনে নেমেছেন। ডিপিএসসির (DPSC) সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। শুক্রবার ডায়মন্ড হারবারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সামনে বিক্ষোভ থেকেই নিজের মাথার চুল কামিয়ে (Hair cut)ফেলেন দেবাশিস।
[আরও পড়ুন: ‘জন্মের আগেই নোটিস দিয়েছে অভিষেককে’, ইডিকে একহাত নিলেন মমতা]
এবারই প্রথম নয়। এর আগে বালিগঞ্জে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের অফিস থাকাকালীন সেখানেও প্যানেল প্রকাশের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নিয়েও দেবাশিস নেড়া হয়েছিলেন। তিনি জানান, কামিয়ে ফেলা চুল সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। ওই চুল ক্যানসার রোগীদের জন্য দান করবেন। এর আগে গত ডিসেম্বরে রানি রাসমনি রোডে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন মঞ্চে পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) চাকরিপ্রার্থী রাসমনি পাত্রও এভাবেই নিজের লম্বা চুল কেটে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এর পর কুণাল ঘোষের উদ্যোগে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর (Bratya Basu) সঙ্গে আলোচনায় বসেন। কিন্তু তাতেও নিয়োগ জট কাটেনি। এবার দেবাশিসের চুল বিসর্জনেও কি অধিকার আদায় সম্ভব? উত্তর ভাবীকালের গর্ভে।