shono
Advertisement

কলকাতায় ফের অঙ্গদানের নজির, মৃত মৃগী রোগীর লিভার ও কিডনিতে নতুন জীবন তিনজনের

মৃত মহিলা হরিদেবপুরের বাসিন্দা ছিলেন।
Posted: 01:51 PM Sep 01, 2022Updated: 01:51 PM Sep 01, 2022

অভিরূপ দাস: কলকাতায় অঙ্গদানের নজির। প্রয়াত সোহিনী বসুর (৩৯) অঙ্গে প্রাণ ফিরে পেলেন তিনজন। দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা ওই মহিলা দীর্ঘদিন ধরে মৃগী রোগে ভুগছিলেন।

Advertisement

গত ২৯ আগস্ট সোহিনী বসুর স্বামী প্রাতঃভ্রমণে বেড়িয়েছিলেন। ফিরে দেখেন স্ত্রী মাটিতে পড়ে রয়েছে। মুখ দিয়ে গ‌্যাঁজলা বেরোচ্ছে। দ্রুত ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা রোগীকে পরীক্ষা করে জানান, বাড়িতে কেউ ছিল না। এই সময় মৃগির খিঁচুনি শুরু হয়েছিল তাঁর। যার থেকে হাইপক্সিয়া। মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছয়নি দীর্ঘক্ষণ। বুধবার ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কের মৃত‌্যু হয়। সেই সূত্রেই সোহিনীর মরণোত্তর অঙ্গগুলি প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয় দুপুর থেকে। গভীর রাতে তাঁর লিভার ও দু’টি কিডনি যথাক্রমে এসএসকেএমে, আরএন টেগোর এবং কম্যান্ড হাসপাতালের তিন রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়। হার্টের কোনও গ্রহীতা মেলেনি। ভিনরাজ্যে হার্ট নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত প্রাথমিক ভাবে নেওয়া হলেও পরে তা বাতিল হয়।

[আরও পড়ুন: ‘ব্যাপক ভোট হবে’, জেলে থেকেও পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী অনুব্রত]

আমরি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ রূপক কুণ্ডু জানিয়েছেন, ভরতির সময় থেকেই ওই রোগিণী কোমায় ছিলেন। তাঁর রক্তচাপ এতটাই কম ছিল যে যন্ত্রে মাপা যাচ্ছিল না। পরে বোঝা যায়, তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণও হয়েছে। তবে মূল সমস্যা খিঁচুনির কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি বা এপিলেপ্টিক শক। হাসপাতালের ব্রেন ডেথ কমিটির প্রধান চিকিৎসক প্রখর জ্ঞানেশ জানান, “আন্দাজ করা হয়েছিল ব্রেন ডেথ হয়েছে। সমস্ত নিয়ম মেনে অ্যাপনিয়া টেস্ট করা হয় সোহিনীর। তাতে স্পষ্ট হয়, ধারণাই ঠিক। একথা সোহিনীর স্বামী তারাপ্রসন্ন দত্তকে জানানোর পরেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, স্ত্রীয়ের মরণোত্তর অঙ্গগুলি দান করবেন।” তারাপ্রসন্নবাবুর কথায়, ‘‘আমার স্ত্রী অন্যের মধ্যে বেঁচে থাকবে এর চেয়ে মহৎ কিছু হয় না।’’

সেইমতো হাসপাতালের তরফে যোগাযোগ করা হয় অঙ্গদান সংক্রান্ত আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা রিজিওনাল অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনের (রোটো) সঙ্গে। ঠিক হয়, শহরের তিনটি হাসপাতালে লিভার ও দু’টি কিডনি প্রতিস্থাপিত হবে। বুধবার সন্ধ্যাতেই মরণোত্তর অঙ্গ আহরণ (রিট্রিভাল) ও সংরক্ষণের (হার্ভেস্টিং) জন্য তিনটি হাসপাতালের অন্তত ২০ জন ট্রান্সপ্লান্ট সার্জেন পৌঁছে যান ঢাকুরিয়া আমরিতে। অনেক রাতে মেটে সে প্রক্রিয়া। তার পর কলকাতা পুলিশের তৈরি করে দেওয়া গ্রিন করিডর মারফত তিনটি হাসপাতালে চলে যায় অঙ্গগুলি।

[আরও পড়ুন: স্বমেহনে বিপদ! যৌনসুখ পেতে জরায়ুতে টর্চ, ৮ বছর পর কলকাতার হাসপাতালে জটিল অস্ত্রোপচার]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement