বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বদলাচ্ছে বঙ্গের গেরুয়া শিবিরের ঘরোয়া সমীকরণ? ক্রমশই দলে কোণঠাসা হচ্ছেন বিরোধী দলনেতা। যে কোনও অজুহাতে দিল্লি আসতে নিষেধ করা হচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari)। তাই কথায় কথায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠি লেখার নয়া কৌশল নিয়েছেন তিনি। পালটা কৌশল নিয়েছে শুভেন্দু বিরোধী শিবিরও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi)সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন বঙ্গের বিজেপি সাংসদরা।
রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা করতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে কোনও একদিন প্রধানমন্ত্রী সময় দিতে পারেন তাঁদের। সূত্রের খবর এমনই। তবে রাজ্যের ইস্যুতে মোদির সঙ্গে আলোচনার আবেদন অজুহাত মাত্র। বরং শুভেন্দুকে বার্তা দিতেই বিরোধী শিবিরের নয়া কৌশল বলে মনে করছে বঙ্গ বিজেপির একাংশ।
[আরও পড়ুন: ‘আমায় বিয়ে করবেন?’, বিমানবন্দরে ভক্তকে গোলাপ দিয়ে প্রস্তাব রোহিতের! ভিডিও ভাইরাল]
রাজ্যে চলতে থাকা কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অনিয়মের নতুন নতুন অভিযোগ করে প্রতিদিনই প্রধানমন্ত্রী-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের চিঠি দেওয়া অভ্যাসে পরিণত করেছেন শুভেন্দু। এতেই শেষ নয়। সম্প্রতি দলেরই এক নেতাকে দিল্লি (Delhi)পাঠান। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রকের মন্ত্রী-সহ সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও দেখা করেন। দলকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে এভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের চিঠি বা ঘনিষ্ঠ নেতাকে রাজধানীতে পাঠানো সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষরা। শুভেন্দুকে চাপে ফেলতে পালটা কৌশল নিয়েছেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, ১৩ মার্চ সংসদে দ্বিতীয় দফার বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন বঙ্গের কয়েকজন সাংসদ। আলোচনায় ঠিক হয় রাজ্যের কেন্দ্রীয় প্রকল্প, আইনশৃঙ্খলা ও সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চেয়ে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন। আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী সময় দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের এক বিজেপি সাংসদ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, দফায় দফায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল রাজ্যে ঘুরে গিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সব বিষয়ে ওয়াকিবহাল। তাহলে কেন বঙ্গের গেরুয়া সাংসদদের একাংশ কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানালেন?
[আরও পড়ুন: ‘বাংলা ভাষা বিলুপ্তপ্রায়’, ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে ছাঁটাইয়ের চিঠি শিক্ষিকাকে, তুঙ্গে বিতর্ক]
গেরুয়া শিবিরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি (BJP) এখন আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে। বিরোধী দলনেতা ঘনিষ্ঠদের নিয়ে নিজের একটি ‘বৃত্ত’ তৈরি করেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজের পছন্দের লোকদের প্রার্থী করতে চাইছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে কতখানি পছন্দ করেন, তা প্রমাণে মরিয়া শুভেন্দু। তাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে পালটা চাপ দেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিরোধী গোষ্ঠী। শুভেন্দু বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা মোদি ছাড়াও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।