শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ৩২৩ দিন জেল হেফাজতে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁকে যে কোনও শর্তে জামিনের আবেদন আইনজীবী সোমরাজ চট্টরাজের। তবে এবারও আসানসোল সিবিআই আদালতে খারিজ আবেদন। জামিন পেলেন না বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।
শুক্রবার নেটওয়ার্ক সমস্যা থাকায় তিহাড় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) ভারচুয়াল শুনানি হয়নি। অনুব্রতর হয়ে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। তিনি বলেন, “আমার মক্কেল (অনুব্রত) গত বছরের ১১ আগস্ট থেকে জেলবন্দি। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি চার্জশিট জমা পড়েছে। কবে ট্রায়াল শুরু হবে তা জানা যাচ্ছে না।” প্রভাবশালী তত্ত্ব খাড়া করে জামিনের বিরোধিতা করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী জয় কিষাণ। তিনি বলেন, “অনুব্রত ভীষণ প্রভাবশালী ব্যক্তি। তদন্ত এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলছে। এই সময় তাঁকে জামিন দেওয়া হলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন।” অনুব্রতর আইনজীবীর প্রশ্ন, “ভিন রাজ্যে রয়েছেন অনুব্রত। ওখানে থেকে বসে কী প্রভাব খাটানো সম্ভব?”
[আরও পড়ুন: বাকি স্ত্রীর শেষকৃত্যের কাজ, শর্তসাপেক্ষে প্যারোলের মেয়াদ বাড়ল কালীঘাটের কাকুর]
দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শেষে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক সুশান্ত ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করতে শুরু করেন। বলেন, “২৮৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আর কত লাগবে?” প্রত্যুত্তরে সুশান্তবাবু জানান, “নতুন নতুন তথ্য উঠে এসেছে। তার জন্য কয়েকজন সাক্ষীর বয়ান প্রয়োজন।” বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী জানতে চান, “আর কতদিন তদন্ত চলবে?” সুশান্ত ভট্টাচার্যের দাবি, খুব দ্রুত চূড়ান্ত পর্বে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।” শুনানি শুনে বিচারক রায়দান সাময়িক স্থগিত রাখেন। এরপর ঘণ্টাদুয়েক পর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ জুলাই।
এদিকে, আরও প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলল অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের। শুক্রবার আসানসোল সিবিআই আদালতে বিচারকের কাছে সিজারলিস্ট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁর ৩টি নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে সিবিআই। ওই তিনটি অ্যাকাউন্টে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা রয়েছে বলে সিবিআই আদালতে জানিয়েছে। অ্যাকাউন্টগুলি ইতিমধ্যেই ফ্রিজ করা হয়েছে। এছাড়া মুর্শিদাবাদের ডোমকলে ইটভাটা, বীরভূমের সিউড়িতে পাথর খাদানের জন্য জমি এবং ইলামবাজারে একটি পেট্রল পাম্পের হদিশ পেয়েছে সিবিআই। কিন্তু কোনটাই সায়গলের নামে নেই। ওই সম্পত্তিগুলি সায়গল হোসেনের মা ও স্ত্রীর নামে রয়েছে। আগামী ৬ জুলাই দিল্লি হাই কোর্টে জামিন মামলার শুনানি। তার আগে সায়গলের মা ও স্ত্রীর নামে সম্পত্তির হদিশ এবং সিবিআইয়ের সিজার লিস্ট অনুব্রতর দেহরক্ষীকে বিপদে ফেলবে বলেই মত আইনজীবীদের।