নন্দন দত্ত, সিউড়ি: একা একা আচমকা দিল্লির ইডি (ED) দপ্তরে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা। বুধবার এই ঘটনার জেরে কিছুটা প্রভাব পড়ল বোলপুরের (Bolpur) নিচুপট্টির বাড়িতেও। এই বাড়ি আগেও মাঝেমধ্যে জনশূন্য হয়েছে। কিন্তু এবার যেন বেশিই শুনশান হয়ে পড়েছে মণ্ডল বাড়ি। পাশেই থাকেন অনুব্রতর দাদা সুব্রত মণ্ডল ও তাঁর পরিবার। সুকন্যা গ্রেপ্তার হয়ে যাওয়ার পরও তাঁরা উদাসীন। বলছেন, কোনও সম্পর্ক ছিল না।
বহুদিন ধরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে ছিলেন গরু পাচার মামলায় গ্রেপ্তার বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) কন্যা সুকন্যা। তাঁর বিপুল সম্পত্তির হদিশ মেলার পর থেকেই ইডি এ বিষয়ে জেরা করছিল। কীভাবে প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষিকার এত সম্পত্তি, তার উৎস জানতে তদন্ত শুরু হয়। একাধিকবার তাঁকে দিল্লিতে ডেকে জেরা করা হয়েছে। সম্পত্তির উৎস তাঁর বাবা সব জানেন বলে বারবার ইডির প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন সুকন্যা। বুধবারও সুকন্যাকে ইডি দপ্তরে ডেকে পাঠানো হয়। দীর্ঘক্ষণ জেরার পর রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইডি। বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট তাঁকে ৩ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
[আরও পড়ুন: ‘হুজুর, ওটা ফলস কেস! এবার CBI মামলায় আমায় জামিন দিয়ে দিন’, কাতর আরজি অনুব্রতর]
সুকন্যা গ্রেপ্তার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসে বীরভূমের জেলা তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। জেলায় দলের মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, ”সুকন্যা আমাদের দলের সরাসরি সদস্য নন। কিন্তু তাঁকে এভাবে গ্রেপ্তার করার তীব্র নিন্দা করছি আমরা। দু’বছর আগে সুকন্যার মা মারা গিয়েছেন। তাঁর বাবা এখন দিল্লির জেলে বন্দি। এই অবস্থায় সুকন্যা তদন্তকারীদের সাহায্য করেছেন। যখনই ডাকা হয়েছে, সুকন্যা গিয়ে হাজিরা দিয়েছেন। সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। তারপরও তাঁকে কেন গ্রেপ্তার করা হল? আমরা সবরকমভাবে ওর পাশে আছি।”
[আরও পড়ুন: সুকন্যার গ্রেপ্তারির পরই ইডি দপ্তরে বান্ধবী, কাঁদতে কাঁদতে বললেন,’ওর পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই’]
এদিকে বোলপুরের নিচুপট্টিতে অনুব্রতর বাড়ির পাশেই থাকেন দাদা সুব্রত মণ্ডল। তিনি সুকন্যার গ্রেপ্তারির খবর শুনে জানান, ”তেমন যোগাযোগ নেই। ওর বাবা মানে আমার ভাই গ্রেপ্তার হওয়ার পর ওর পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই রাতে সুকন্যা এত অস্বাভাবিক আচরণ করে যে দলের লোকজনকে ছুটে আসতে হয়। তারপর থেকে আমরা দূরত্ব বজায় রেখেছি, আর কোনও সম্পর্ক নেই।” এতদিন দলের কেউ সুকন্যাকে দেখতেও আসেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন সুব্রতবাবু। সবমিলিয়ে, পরিবারের তরফে সে অর্থে আর কেউই নেই, যাঁরা অনুব্রত কিংবা সুকন্যার কঠিন সময়ে তাঁদের পাশে থাকবেন।