সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুই রাউন্ডের হাড্ডাহাড্ডি ভোটগণনা। টানটান উত্তেজনার পরে অবশেষে নির্বাচিত হলেন শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট। দ্বীপরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবার প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসতে চলেছেন কোনও বামপন্থী নেতা। রবিবার বিকেলে শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, রনিল বিক্রমাসিংহেকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন অনুরাকুমার দিশানায়েকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভারত বা চিন দুই দেশের ঘনিষ্ঠ নেতাদেরই বাতিল করে দিয়েছে শ্রীলঙ্কার আমজনতা। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির বেহাল দশা থেকে দেশকে টেনে তুলতে তাঁদের ভরসা বামপন্থী দিশানায়েকের উপর।
শ্রীলঙ্কার বামপন্থী দল জনতা বিমুক্তি পেরামুনার নেতা দিশানায়েকে প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিলেন ভোটগণনায়। ৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে যান তিনি। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই বিরাট ব্যবধান তাঁর হাতছাড়া হয়। লড়াইয়ে উঠে আসেন বিক্রমাসিংহে। প্রথম রাউন্ডের পরে দেখা যায়, কোনও প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট পাননি। ফলে শুরু হয় দ্বিতীয় রাউন্ডের গণনা। ইতিহাসে প্রথমবার দ্বিতীয় রাউন্ডে যায় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের গণনা।
শেষ পর্যন্ত ৪২.৩১ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন দিশানায়েকে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বর্তমান বিরোধী দলনেতা সাজিথ প্রেমদাসা। অনেকটা ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় হয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। চতুর্থ স্থান পাওয়া গোতাবায়া রাজাপক্ষে কার্যত মুছে গিয়েছেন নির্বাচন থেকে। জানা গিয়েছে, সোমবারই শপথ নেবেন শ্রীলঙ্কার সদ্যনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। উল্লেখ্য, ২০২২ আর্থিক সংকটে জেরবার হওয়ার পরে এটাই শ্রীলঙ্কার প্রথম নির্বাচন ছিল।
চলতি বছরের শুরুতেই ভারত সফরে এসেছিলেন দিশানায়েকে। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকও করেন। তবে নানা ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার বার্তা দিলেও অতীতে একাধিকবার ভারতবিরোধিতার নিদর্শন রেখেছে দিশানায়েকের দল। ভারত সফরের পরে শ্রীলঙ্কা ফিরে গিয়েও তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, দলের অবস্থানগত পরিবর্তন হবে না। অর্থাৎ দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে নয়াদিল্লি। অন্যদিকে, নির্বাচনী প্রচারেই দিশানায়েকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন যে চিনের প্রতি 'বশ্যতা' স্বীকার করতেও তাঁরা মোটেই রাজি নন।