সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভূমিকম্প প্রাণ কেড়েছে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের। কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে একাধিক শহর। তবে শুধু প্রাণহানি নয় ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প বদলে দিয়েছে মায়ানমারের মানচিত্রও। পৃথিবী থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে মহাশূন্য থেকে ধ্বংসের সেই ভয়াবহ ছবি তুলে ধরল ইসরো।
সাগাইং শহরের ধ্বংসের ছবি।
স্যাটেলাইট কার্টোস্যাট-৩ ব্যবহার করে মহাকাশ থেকে মায়ানমারের ধ্বংসযজ্ঞের একাধিক ছবি তুলেছে ইসরো। যেখানে তুলে ধরা হয়েছে, ভূমিকম্পের আগে কী অবস্থায় ছিল মায়ানমার, আর পরে কী অবস্থা হয়েছে। মায়ানমারের বৃহত্তম শহর মান্ডলয়-সহ এই দেশের একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান এমনকী ইরাবতী ব্রিজ ধ্বংসের ছবিও তুলে ধরা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ইসরোর ছবিতে দেখানো হয়েছে এই ভূমিকম্পের জেরে গতিপথ বদলে গিয়েছে ইরাবতী নদীর। ইসরোর স্যাটেলাইট ইমেজে স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়েছে মান্ডলয় বিশ্ববিদ্যালয়, আনন্দ প্যাগোডা কীভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কার্যত গুড়িয়ে গিয়েছে স্কাই ভিলা, ফায়ানি প্যাগোডা, মহামুনি প্যাগোডা, আনন্দ প্যাগোডা, মান্ডলয় বিশ্ববিদ্যালয়-সহ আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ইন ওয়া শহরের কাছে ইরাবতী নদীর উপর ঐতিহাসিক আভা (ইন ওয়া) সেতু ভেঙে পড়েছে। নদীর প্লাবনভূমিতে ফাটল ধরা পড়েছে। বদলে গিয়েছে গতিপথও।
মান্ডলয় শহর ও আভা ব্রিজ।
শুক্রবার সকালে তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মায়ানমার। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। উৎপত্তিস্থল সে দেশের সাগাইং শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। ভারত, বাংলাদেশেও প্রভাব পড়ে এই ভূমিকম্পের। এছাড়া মায়ানমারের পাশাপাশি ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রতিবেশী থাইল্যান্ডও। সেখানেও ভেঙে পড়ে একের পর এক বহুতল, ব্রিজ। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ফের কম্পন অনুভূত হয়। সেই ‘আফটারশকে’র মাত্রা ছিল ৬.৭। এরপরও চলতে থাকে লাগাতার আফটারশক। ভূবিজ্ঞানী জেস ফিনিক্স মায়ানমারকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, ভূপৃষ্ঠের নিচে ইউরেশীয় প্লেটের সঙ্গে ভারতীয় প্লেটের সংঘর্ষ যেহেতু অব্যাহত রয়েছে, তাই আগামী কয়েক মাস ধরেই ‘আফটারশক’ চলতেই থাকবে।
ভূমিকম্পের আগে ও পরে মান্ডলয় শহরের অবস্থা।
এদিকে ভূমিকম্পের কারণ ব্যাখ্যা করে ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান প্লেটের ফাটলের কাছে অবস্থিত মায়ানমার। এই ভারতীয় প্লেট প্রতিবছর ৫ সেন্টিমিটার হারে ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এছাড়াও এই অংশে রয়েছে বেশকিছু ফল্ট জোন। 'সাংহাই ফল্ট' এর মধ্যে অন্যতম। এই ভৌগলিক সমস্যার কারণে এর আগেও একাধিকবার বড় ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে মায়ানমারে।