shono
Advertisement

বিষয়ে নতুনত্ব, ভাল অভিনয়, তবুও ফিকে শান্তিলাল ও তুহিনার ‘অপরাজিতা’!

বাবা ও মেয়ের জটিল সম্পর্ক নিয়েই তৈরি হয়েছে এই ছবির গল্প।
Posted: 05:39 PM Mar 14, 2022Updated: 06:25 PM Mar 14, 2022

নির্মল ধর: বাবা (শান্তিলাল) বড় মেয়েকে বেশি ভালোবাসে, ছোটো মেয়েকে (তুহিনা) ততোটা নয় – এমন একটা ধারণা ও বিশ্বাস থেকেই সেই ছোটবেলাতেই শুরু অভিমান ও দুজনের মাঝে সম্পর্কের মাঝে পাঁচিল।

Advertisement

বড়ো হয়ে সেই পাঁচিল প্রায় চিনের প্রাচীরের মতো দুর্ভেদ্য হয়ে দাঁড়ায়। কেন এমন অভিমান? ছোট মেয়ের ধারণা বাবা চাকরিজীবনে শুধু অফিস আর ক্লাবের আড্ডা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন, মা এবং মেয়েকে এতটুকুও সময় দেননি। দিদি বিয়ের পর প্রবাসী। বাবার অবহেলাতেই মায়ের অকাল মৃত্যু, এমন বিশ্বাস থেকেই দুজনের মাঝে নীরব অভিমানের পালা শুরু।

তবে একটু পর থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, বাবা – মেয়ের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে, কিন্তু ট্র্যাজিক পরিণতি অবশ্যম্ভাবী। হয়েছেও তাই। ছবি শুরু মায়ের মৃত্যু দিয়ে, শেষে বাবার মৃত্যু (নাকি আত্মহত্যা?, যার একটা ইঙ্গিতও ছিল)। মাঝে জায়গা পেয়েছে চিঠিতে বা ডায়েরি লেখার ভঙ্গিতে। চার বছর আগের অতীতে যাওয়া বা মাঝে মধ্যে আজকের সময়ে ফিরে আসার ব্যাপারটা সব সময় কন্টিনিউটি মেনে হয়েছে এমনটিও বলা যাবে না।

[আরও পড়ুন: বিতর্ক পেরিয়ে কাশ্মীরি পণ্ডিদের দুঃখের কাহিনি তুলে ধরতে পারল ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’? ]

কলকাতা শহরের (বিশেষ করে ই এম বাইপাস) কিছু এরিয়াল শট ড্রোন ক্যামেরায় তুলে তিন চারবার ব্যবহার কোন কাজে এল তা বোঝা গেল না। বাবা মেয়ের ভুল বোঝাবুঝির ব্যাপারটাও সীমাবদ্ধ রইল ডাইরি লেখার পাতায়। সেটাকে ভিজুয়্যালি প্রতিষ্ঠা দিতে যে সিনেম্যাটিক ব্যাকরণের দক্ষতা প্রয়োজন সেটা তরুণ পরিচালক রোহন সেনের নেই বললেই চলে। তবুও অস্বীকার করা যাবে না, তিনি নিজের সীমাবদ্ধতা জেনেও এমন একটি জটিল মানসিক সম্পর্ক নিয়ে ছবি তৈরির কথা ভেবেছেন! যেখানে এখন প্রায় সবাই থ্রিলার, গোয়েন্দা, রহস্য কাহিনী নিয়ে সিনেমা ফাঁদতে ব্যস্ত। সেখানে রোহন অন্তত অন্যরকম ছবি তৈরি করেছেন। এর জন্য তাঁকে বাহবা দিতেই হয়।

ছবিটির পরিবেশনায় কোথাও এতটুকু বাহুল্য নেই , বেশ মাপা কাজ। অনুপম রায়ের গাওয়া গান, বা আবহ অবশ্যই ছবির একটা স্ট্রং পয়েন্ট। কিন্তু তার সঙ্গে ক্যামেরায় তোলা ছবির মিল পাওয়া যায় না।
তরুণ পরিচালকদের ঠিক এই জায়গাতেই একটা খামতি থেকে যাচ্ছে। বিষয় নিয়ে তাঁরা ভাবছেন ঠিকই, কিন্তু সেই বিষয়কে সিনেম্যাটিকলি পর্দায় উপস্থিত করার ব্যাপারে বেশ অনভিজ্ঞ। গণ্ডগোলটা ঘটে যাচ্ছে এখানেই। এটা নিয়ে ছবি তৈরির আগে একটু ভাবুন।
শট টেকিং, শটগুলো নিয়ে সুচিন্তিত ভাবনার প্রয়োজন। যাই হোক,অগুনতি বাংলা ছবির ভিড়ে “অপরাজিতা” নিশ্চয়ই ব্যতিক্রম, এবং সেই কারণেই এই ধারার ছবিকে পৃষ্ঠপোষণ করা উচিত। অভিনয়ে প্রধান দুটি চরিত্রে শন্তিলাল মুখোপাধ্যায় ও তুহিনা দাশ তাঁদের সেরাটুকু দিয়েছেন। শান্তিলাল অভিজ্ঞ অভিনেতা, তিনি যথেষ্ট সংযমী এবং বাস্তব। তুহিনাও কিন্তু বেশ সাবলীল, স্বাভাবিক, এবং চরিত্রটির অন্তর ধরতে প্রয়াসী। এবং সফলও। চিত্রনাট্যের দুর্বলতা তিনি আর ঢাকবেন কীভাবে? সিনেমাতো পরিচালকের মিডিয়াম, অভিনেতা প্রপস মাত্র! তাই “অপরাজিতা” সিনেমা হয়ে উঠল না, গল্প বলাই হলো শুধু!

[আরও পড়ুন: ম্যানগ্রোভের অন্দরের কাহিনি ‘সুন্দরবনের বিদ্যাসাগর’, কেমন হল ঋদ্ধি-ঊষসীর নয়া সিরিজ?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement