নব্যেন্দু হাজরা: মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটায় মুকুন্দপুর থেকে বেলেঘাটা বিল্ডিং মোড়ে অফিস যাওয়ার জন্য অ্যাপ ক্যাব (App Cab) বুক করেছিলেন তানিয়া ভট্টাচার্য। ১১ কিলোমিটার রাস্তা যেতে ভাড়া উঠেছে ৪৩০ টাকা। দুপুর আড়াইটে নাগাদ অফিস থেকে বাড়ি আসতে ক্যাবেই ভাড়া উঠেছে ২২০ টাকা। একেবারে ২১০ টাকা কম। তবে অ্যাপে গাড়ি সহজে পাননি। একের পর এক ট্রিপ ক্যানসেল হয়েছে। যে কারণে গাড়ি পেতেই লেগেছে প্রায় আধঘণ্টা।
নতুন রোগে আক্রান্ত অ্যাপ ক্যাব। ব্যস্ত সময় পার হলেই বুকিং নিচ্ছেন না চালকরা। কারণ সেই সময় সারচার্জ চড়ছে না। বেলা ১২টার পর অনেক চালকই মোবাইল বন্ধ করে দিচ্ছেন। আবারও বিকেলের পর পিক টাইমে তা চালু করছেন। তাই দুপুরের দিকে গাড়ির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। সন্ধের দিকে আবার চাহিদা থাকায় ভাড়াও উঠছে চড়চড় করে। কিলোমিটারপিছু ভাড়া ৪০—৫০ টাকাও উঠে যাচ্ছে সকাল-সন্ধের সময়।
[আরও পড়ুন: তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর ‘শ্লীলতাহানি’, প্রাথমিক শিক্ষককে গণধোলাই অভিভাবকদের]
এখন অ্যাপ ক্যাব বুক করলে চালককে গন্তব্য এবং ভাড়া দুই-ই দেখানো হয়। ট্রিপ অ্যাকসেপ্ট করার জন্য সময় দেওয়া হয় সাত সেকেন্ড। ভাড়া ২০০—২৫০ টাকার বেশি কি না, তা দেখে সেই ট্রিপ ধরছেন চালক। কম হলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে ব্যস্ত সময় ছাড়া গাড়ির হদিশ পেতে বেশ বিপাকেই পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ক্যাব চালকদের দাবি, জ্বালানির দাম যে জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে, তাতে ২০০ টাকার বেশি চার্জ না হলে সেই দূরত্ব যাওয়া মুশকিল। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা ট্রিপ বাতিল করছেন।
রাজ্যের তরফে অ্যাপ ক্যাব নিয়ন্ত্রণে গাইডলাইন আনা হয়েছে। যদিও তা এখনও চালু হয়নি। সেখানে বলা হয়েছে, অ্যাপ ক্যাবের সর্বোচ্চ ভাড়া বেস ফেয়ারের ৫০ শতাংশ বেশি নেওয়া যাবে। মানে এসি ট্যাক্সির বেস ফেয়ার যেখানে প্রথম দু’কিলোমিটার ৩৭ টাকা, সেখানে সারচার্জ হিসাবেও সর্বোচ্চ ভাড়া ৫৫ টাকা হওয়ার কথা। অর্থাৎ কিলোমিটারপিছু ২৭ টাকার বেশি নিতে পারবে না কোনও অ্যাপ ক্যাব সংস্থা। অথচ দেখা যাচ্ছে, এই ভাড়া কখনও কিলোমিটারপিছু ৪০, কখনও ৫০ টাকাও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: প্রাথমিক টেট কেলেঙ্কারিতে সরাসরি বাম যোগ! বরখাস্ত ডাকসাইটে সিপিএম নেতার মেয়ে]
যাত্রীদের বক্তব্য, চালকদের গন্তব্য, ভাড়া পছন্দ না হলেই যাত্রী প্রত্যাখ্যান। এই গরমেও এসি চালাচ্ছেন না অধিকাংশ চালক। চালকদের দাবি, বিমার টাকা দিতেই তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন, তাই গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণও ঠিক করে হচ্ছে না। এসি খারাপ হলে তা সারাচ্ছেন না। অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ব্যস্ত সময় পেরিয়ে গেলে সারচার্জ থাকে না। অনেকেই এই সময়ে গাড়ি বসিয়ে রাখছেন। কম টাকা উঠলে গাড়ি চালিয়ে লাভ হচ্ছে না চালকদের।”