গোবিন্দ রায়: আজও একলা মা’কে দূরে রেখেছে সমাজ! প্রতিক্ষেত্রেই তার উদাহরণ পাওয়া যায়। কিছু কিছু প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এনিয়মে বদল এলেও, অনেক ক্ষেত্রেই বদলায়নি নিয়ম। যেখানে আইন-আদালত ক্রমশ ‘সিঙ্গল মাদার’-এর অধিকার স্বীকৃতি দিচ্ছে, সেখানে আইনজীবী হওয়ার জন্য এনরোলমেন্ট ফর্মেই সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বাবার নাম এবং স্বামীর নাম উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। অথচ মায়ের নাম উল্লেখ করার কোনও জায়গা নেই। এনিয়ে দায়ের হওয়া বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এবং রাজ্যের বার কাউন্সিলের কাছে তাঁদের অবস্থান জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট।
যুগের আধুনিকতার ছোঁয়া পেলেও সমাজ ব্যবস্থা এখনও আধুনিক হতে পারেনি। প্রশাসনিক বিভিন্ন জায়গা থেকে ‘সিঙ্গল মাদার’ অর্থাৎ একলা মা কে দূরে রেখেছে সমাজ, মানে আশেপাশের মানুষ, মন থেকে সেই অধিকার আজও মেনে নিতে পারেনি। আইনী ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে তার প্রমাণ। এবার তা নিয়েই মামলা দায়ের হল কলকাতা হাই কোর্টে। এই ব্যবস্থার বদল করার আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ জনৈক আইনজীবী। মামলায় তাঁর দাবি, আইনজীবী হওয়ার জন্য থাকা সংশ্লিষ্ট ফর্মে মায়ের নামও উল্লেখেরও জায়গা থাক।
[আরও পড়ুন: অধিকারী বাড়ির মহিলা ভোটারদেরও সমর্থন চায় TMC, কাঁথির চা চক্রে ইঙ্গিত কুণালের]
মামলাকারীর আরও অভিযোগ, যাঁদের সিঙ্গল মাদার রয়েছেন, তাঁদের প্রতি এটি একটি চূড়ান্ত বৈষম্যমূলক এবং তাঁদের মৌলিক অধিকারীর বিরোধী আচরণ। একজন সিঙ্গল মাদার বা একলা মায়ের সন্তানও দেশের নাগরিক এবং তাঁর মৌলিক অধিকার কেউ লঙ্ঘন করতে পারে না। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চের নির্দেশ, বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া এবং রাজ্যের বার কাউন্সিলের থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের অবস্থান জানাবে হাই কোর্টে। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি এই সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
মামলাকারী আইনজীবীর বক্তব্য, রাজ্য বার কাউন্সিল কেবলমাত্র পিতা এবং স্বামীর নামের তথ্য চেয়ে আজকের দিনে দাঁড়িয়েও পিতৃতন্ত্রের একটি ধারাকে ফুটিয়ে তুলছে। অ্যাডভোকেট এনরোলমেন্ট ফর্মে মায়ের নাম উল্লেখ করার জায়গা না রাখাটি ভারতীয় সংবিধানের ১৪, ১৯(জি) এবং ২১ নং ধারা অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এই নিয়ে আদালতে মামলা করেছেন তিনি।