অর্ণব দাস, বারাকপুর: আড়িয়াদহের ত্রাস জয়ন্ত সিংয়ের বেআইনি দুধ সাদা প্রাসাদ নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে। তার মাঝেই সামনে এল তাঁর ক্লাব তালতলা স্পোটিং নিয়ে নতুন বিতর্ক। অভিযোগ উঠল সেখানে নাকি পূর্বে কংগ্রেসের কার্যালয় ছিল। পরবর্তীতে সেখান থেকেই তৃণমূল কর্মীরা দলের কাজ পরিচালনা করত। প্রোমোটিং হওয়ার পর সেখানে পার্টি অফিস করে দেওয়ার কথা থাকলেও করে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। তা নিয়ে সোশাল মিডিয়াতেও সবর হয়েছেন অনেকে। ঘটনাটি বাম আমলের বলেই এড়িয়ে গিয়েছে শাসকদল।
প্রসঙ্গত, আড়িয়াদহ কাণ্ডে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। মা-ছেলেকে গণপিটুনি থেকে শুরু করে ক্লাবঘরে একের পর এক পাশবিক অত্যাচারের ভিডিও সিরিজ দেখে শিউড়ে উঠেছেন সকলে। আর এই সব ঘটনাও অন্যতম অভিযুক্ত জয়ন্ত সিং-সহ একাধিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারই মধ্যে সামনে এসেছে জয়ন্তর অবৈধভাবে তৈরি প্রাসাদ নিয়ে বিতর্ক। এর পরই সোশাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্টে মারকুটে জয়ন্তর তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবের জায়গা গিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা (শহর) কংগ্রেসের সম্পাদক সুব্রত দাস বলেন, প্রথমে ওটা কংগ্রেসের পার্টি অফিস ছিল। ৯৮সালে তৃণমূল সেটা দখল নেয়। ২০০৬-০৭ সালে সেখানে প্রমোটিং হয়। সেখানেরই পুকুর পাড়ে আগে ২০টি পরিবার থাকত। তাদের যেমন তুলে দেওয়া হয়, তেমনই পার্টি অফিসও ভেঙে দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল প্রমোটিংয়ের পর পার্টি অফিসের একটি জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু কংগ্রেসও পার্টি অফিস উদ্ধার করতে পারেনি, তৃণমূলও পারেনি। আগেও আমাদের দাবি ছিল কংগ্রেসের পার্টি অফিস ফিরিয়ে দেওয়া হোক, এখনও একই দাবি রাখছি।
[আরও পড়ুন: কোপা আমেরিকার রং নীল-সাদা, কলম্বিয়াকে হারিয়ে ফের সেরার আসনে মেসির আর্জেন্টিনা]
যিনি ওখানে প্রোমোটিং করেছিলেন তার বাবা এই জমি পার্টি অফিসটি করতে দিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি। একই মত প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর দেবাশীষ মহাপাত্রর। তবে তার দাবি, ১৯৮৯-৯০ সালে ইন্দিরা সমাজ কল্যাণ সংস্থার নামে আগে ওখানে পার্টির কাজ করা হত। পরে তৃণমূল তৈরি হলে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় আমাদের দলেরই কাজ করা হত। প্রমোটিং করার জন্য রাতারাতি সেই ঘর ভেঙে দেওয়া হল। তখন তৃণমূলকে একটি ঘর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল সেখানে একটি ক্লাব হয়ে গেল, যার নাম তালতলা স্পোটিং ক্লাব। আগে যেখান থেকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চালানো হত, পরবর্তীতে সেখানে মারধরের প্রক্রিয়া চালু হয়ে গেল।
যদিও এই বিতর্ক প্রসঙ্গে কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা জানান, বাম আমলের সময়কালের ঘটনা। তাই আগে ওখানে কি ছিল, পরে কি হয়েছে তা আমার জানা নেই। পাল্টা সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওখানে কোন পার্টি অফিস ছিল বলে জানা নেই। তবে পাশেই অস্থায়ী তালতলা স্পোটিং ক্লাব ছিল। ২০১৪সাল নাগাদ তৃণমূল আমলে সেই বিল্ডিংয়ের নিচের তৈরি মার্কেট হস্তান্তর করা হয়েছিল। সেই সময় কালেই তালতলা স্পোটিং ক্লাবকেও জায়গা দেওয়া হয়। তবে জায়গাটি এখনও পুরসভার নামেই রেকর্ড রয়েছে বলেই জানি, তালতলা ক্লাবের নামে রেকর্ড আছে বলে মনে হয় না।