বিদিশা চট্টোপাধ্য়ায়: কলকাতায় নেমে এসেছে গ্যাংটক। সদর স্ট্রিট-এর ফেয়ারলন হোটেল পরিবর্তিত হয়েছে গ্যাংটকের ডাকবাংলোয়। পরিচালক অরিন্দম শীলের পরিচালনায় সেদিন এখানে ‘শাবাশ ফেলুদা’-র শুটিং। ‘গ্যাংটকে গন্ডগোল’ অবলম্বনে ‘জি ফাইভ’-এর নতুন ফেলুদা সিরিজ। আর গল্পের স্লট অনুযায়ী ‘শশধর বোস’ এবং ‘হেলমুট’-এর ডাকবাংলো রিক্রিয়েট করা হয়েছে কলকাতাতেই। প্রাক পুজো, গরমের মধ্যে তাই কোট, মাফলার, হাফ সোয়েটার, জ্যাকেট পরে শট দিচ্ছেন পরমব্রত, রুদ্রনীল, ঋত্বিক, ঋতব্রত এবং বিদেশি অভিনেতা ক্রিস্টোফার কলিন্স। তবে তার চেয়েও ইন্টারেস্টিং বিষয় হল, ‘ফেলুদা’-র হাত ধরে প্রায় চোদ্দো বছর পর রিইউনিয়ন হল পরমব্রত, ঋত্বিক, রুদ্রনীল এবং পরিচালক-অভিনেতা অরিন্দম শীলের। মনে করালেন, ঋত্বিকই। তিনি এই সিরিজে শশধর বোসের চরিত্রে।
স্পেশাল লুকের কারণেই ঘরের বাইরে পা দিচ্ছিলেন না তিনি। নিজের ঘরে বসে জানালেন, “অজিতের চরিত্রে অভিনয় করার অনেকদিন পর আবার অরিন্দমদার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিলই। চরিত্রটা ইন্টারেস্টিং আর ফেলুদাকে নিয়ে কাজ হলে সকলেরই নজর থাকে। আর সত্যি বলতে কী, পরমের সঙ্গে এর মধ্যে আর তেমন কোনও কাজ হয়নি। শুধু তাই নয়, ‘চলো লেটস গো’-এর প্রায় চোদ্দো বছর পর সবার সঙ্গে এক ফ্লোরে কাজ করছি।” নিশিকান্ত সরকারের চরিত্রে রুদ্রনীল ঘোষকে একটু বয়স্ক মেকআপ দেওয়া হয়েছে। শটের ফাঁকে অভিনেতা বলছিলেন, “চলো লেটস গো’, ‘তিন ইয়ারি কথা’র হাত ধরে একটা অন্য ধারার ছবি শুরু হয়েছিল এবং কোন অভিনেতারা টিকে যাবে সেটারও একটা আভাস পাওয়া গিয়েছিল। তারপর থেকে আমরা প্রত্যেকেই নানা ধারায় আলাদাভাবে কাজ করেছি। আজ চোদ্দো বছর পর একসঙ্গে শুটিং ফ্লোরে কাজ করতে গিয়ে পুরনো অনেক কথাই মনে পড়ছে।” অরিন্দম শীল জানালেন, “এটা সত্যিই ইন্টারেস্টিং। আমার মাথায় আসেনি। সত্যিই প্রায় চোদ্দো বছর পর আমি, পরম, ঋত্বিক, রুদ্র একসঙ্গে কাজ করছি। অপু থাকলে ষোলোকলা পূর্ণ হত।
[আরও পড়ুন: আলমারি খালি করে পোশাক নিলাম করবেন শ্রীলেখা! হঠাৎ এমন কেন সিদ্ধান্ত অভিনেত্রীর?]
‘চলো লেটস গো’ আমাদের প্রত্যেকের জীবনে স্মরণীয় অভিজ্ঞতা, আরবান সিনেমার শুরু।” ফেলুদারূপী পরমব্রত অবশ্য অতীতের চেয়েও বর্তমানে ফোকাস করতে ভালবাসেন অনেক বেশি। অনেকটা ফেলুদার মতোই। একটু আগেই ফেলুদা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘ফেলুদার একটা ঋজু ব্যাপার আছে, সহজে এফেক্টেড হয় না। শিক্ষিত এবং অ্যাডভেঞ্চারাস বাঙালির প্রতীক ফেলুদা। ফেলুদা এমন এক চরিত্র যেটা সব বাঙালি হতে চায়।’ তবে পরমব্রত এও যোগ করলেন এতদিন পর একসঙ্গে ভালই লাগছে। তবে তিনি অনেক বেশি জোর দিলেন ‘জি ফাইভ’-এর ফেলুদা সিরিজের সেকেন্ড সিজন নিয়ে। ‘আমরাই প্রথম বাংলায় ওটিটিতে সিরিজ তৈরি করেছিলাম। ফেলুদা দিয়ে শুরু। আবার ফেলুদা হচ্ছে এবং আমি সেই চরিত্রে অভিনয় করছি সেটা ভাল লাগছে।’ এই সিরিজে তোপসের চরিত্রে রয়েছেন ঋতব্রত। পরমব্রত পরিচালিত ফেলুদার চেয়ে অনেকটাই আলাদা অরিন্দম শীলের ফেলুদা। ‘আমার ফেলুদা একইসঙ্গে স্মার্টফোন ব্যবহার করে, টেকফ্রেন্ডলি, আবার সিধুজ্যাঠার কাছেও যায়। অর্থাৎ একই সঙ্গে কনটেম্পোরারি এবং পুরনো মূল্যবোধেরও দাম আছে। আর চেষ্টা করেছি ‘যমন্তক’ চুরির ঘটনাকে জাতীয় স্তরে নিয়ে যাওয়ার।’ এরপর দ্বিতীয় শিডিউলের শুটিং হবে জানুয়ারি মাসে গ্যাংটকে। সিরিজটি মুক্তি পাবে পয়লা বৈশাখে। নতুন চমক থাকছে। একটি বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে রজতাভ দত্তকে। এই নিয়ে প্রশ্ন করলে অরিন্দম শীল শুধু হাসলেন, এবং চরিত্রের ইনিশিয়ালের একটি ইঙ্গিত দিলেন। উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে সিরিজের।