সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর থেকে ভারত-চিন সম্পর্কের বরফ এখনও গলেনি। বারবার লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের বলে দাবি করেছে বেজিং। যা নিয়ে বিরোধ বেড়েছে দিল্লির সঙ্গে। পড়শি দেশকে একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। কয়েকদিন আগে অরুণাচলে সেলা টানেলের উদ্বোধনের পর থেকে উদ্বেগ বেড়েছে চিনের। এই আবহে এখন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি কেমন? ফের কী সংঘাতে জড়াতে পারে দুদেশের সেনা নাকি আপাতত কেটেছে সংঘর্ষের মেঘ? এসব প্রশ্নে ফের একবার মুখ খুললেন সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে।
পিটিআই সূত্রে খবর, শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে। সেখানে উঠে আসে ভারতের সঙ্গে চিনের (China) বর্তমান সম্পর্ক, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি-সহ একাধিক বিষয়। এনিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে উত্তরে মনোজ পাণ্ডে বলেন, “এই মুহূর্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেও স্পর্শকাতর। যে কারণে সীমান্তের পরিস্থিতি আমরা সব সময় কড়া নজরে পর্যবেক্ষণ করছি। এলএসি-তে সামরিক পরিকাঠামো আরও উন্নত ও শক্তিশালী করা হয়েছে। সবরকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য আমাদের সেনা তৈরি।”
উল্লেখ্য, লাদাখ (Ladakh) থেকে শুরু করে অরুণাচল পর্যন্ত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চোখ রাঙাচ্ছে লালফৌজ। যা নিয়ে নয়াদিল্লির তরফে একাধিকবার বলা হয়েছে, সীমান্তে শান্তি না ফিরলে ভারত-চিন সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না। তবে কয়েকদিন আগেই কমিউনিস্ট দেশটি দাবি করেছে, সীমান্ত ইস্যুর প্রভাব পড়বে না বেজিংয়ের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্কে। একটি অনুষ্ঠানে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছিলেন, “চিন বারবার জোর দিয়েছে যে সীমান্ত বিরোধ কখনওই সমগ্র চিন-ভারত সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটায় না। সীমান্তে পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করতে হবে উভয় পক্ষের সাধারণ স্বার্থে। আমরা আশা করি, ভারত আমাদের সঙ্গে একই দিকে কাজ করবে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবে। উভয় দেশের উচিত পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি এবং ভুল বোঝাবুঝি ও ভুল সিদ্ধান্ত এড়ানো।”
বলে রাখা ভালো, ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় (Galwan Valley) মুখোমুখি হয় ভারত (India) ও চিনের ফৌজ। দুপক্ষের জওয়ানরাই লোহার রড ও কাঁটাতার জড়ানো হাতিয়ার নিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা লড়াই করেন। রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। ১৯৭৫ সালে পর সেবারই প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। কার্যত যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। অবশেষে পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েক দফা আলোচনায় বসে দুই দেশের সেনাবাহিনী। তাতে আঁচ কিছুটা কমলেও উত্তেজনা কমেনি।