সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টিআরপি কেলেঙ্কারি কাণ্ডে (TRP Scam) আরও বিপাকে সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামী (Arnab Goswami)। অর্ণব তাঁর চ্যানেল রিপাবলিকের ভুয়ো টিআরপি রেটিংয়ের জন্য BARC-এর প্রাক্তন CEO পার্থ দাশগুপ্তকে টাকা দিয়েছেন। দু’বার ঘুরতে যাওয়ার জন্য মোট ১২ হাজার মার্কিন ডলার এবং গত তিনবছরে সবমিলিয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন অর্ণব। মুম্বই পুলিশকে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে এমনটাই জানিয়েছেন প্রাক্তন BARC কর্তা। আদালতে জমা দেওয়া ৩ হাজার ৬০০ পাতার অতিরিক্ত চার্জশীটে এই কথাই বলেছে মুম্বই পুলিশ (Mumbai Police)।
পুলিশকে লিখিত বয়ানে পার্থ দাশগুপ্তর বক্তব্য, “অর্ণব গোস্বামীকে আমি ২০০৪ সাল থেকে চিনি। আমরা টাইমস নাউয়ে একসঙ্গে কাজ করতাম। ২০১৩ সালে আমি বার্কের সিইও পদে যোগ দিই। অর্ণব রিপাবলিক লঞ্চ করে ২০১৭ সালে। আমি এবং আমার দল একসঙ্গে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অর্ণবের হয়ে কাজ করেছি। এই সময় ভুয়ো টিআরপির সাহায্যে রিপাবলিককে এক নম্বরে তুলে নিয়ে গিয়েছিলাম। ২০১৭ সালেই অর্ণবের সঙ্গে একাধিকবার ব্যক্তিগত ভাবে দেখা হয়েছে। অর্ণব আমাকে ফ্রান্স ও সুইৎজারল্যান্ডে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য ৬ হাজার ডলার দিয়েছে। এরপর সুইডেন এবং ডেনমার্কে ঘুরতে যাওয়ার জন্যও ফের একবার ওই পরিমাণ টাকাও দিয়েছিল। এছাড়া ২০১৭ সালে ২০ লক্ষ এবং ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। ” যদিও পার্থ দাশগুপ্তের আইনজীবী জানান, ”এই সমস্ত অভিযোগ ভুয়ো। চাপ ও ভয় দেখিয়ে এই কথাগুলো বলানো হয়েছে। সবাই জানে পুলিশ লকআপে দেওয়া স্বীকারোক্তি কখনই আদালতে বৈধ বলে মনে করা হয় না। ” এদিকে, চার্জশীটে বার্কের অডিট রিপোর্টও জমা দিয়েছে মুম্বই পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ‘ঐতিহাসিক ভুলের সমাপ্তি’, বাবরি মসজিদ ভাঙার ‘স্বীকারোক্তি’ প্রকাশ জাভড়েকরের]
প্রসঙ্গত, গত ২৫ ডিসেম্বর টিআরপি কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিলের (Broadcast Audience Research Council) প্রাক্তন CEO পার্থ দাশগুপ্তকে গ্রেপ্তার করেছিল মুম্বই পুলিশ। এই কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুম্বই পুলিশের দাবি অনুযায়ী, পার্থকে জেরা করেই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। এই পার্থ দাশগুপ্তই নাকি পুরো টিআরপি কেলেঙ্কারির মাস্টারমাইন্ড। এবং তিনিই অর্থের বিনিময়ে টিআরপি হেরফের করার কাজটি করতেন। পুলিশের দাবি, অর্ণব গোস্বামী, পার্থর পাশাপাশি BARC-এর প্রাক্তন COO রমিল রামঘরিয়াকেও মোটা অঙ্কের ঘুষ দিতেন। ঘুষের টাকায় পার্থ নাকি মূল্যবান সামগ্রী কিনতেন, যা কিনা পুলিশ তাঁর ফ্ল্যাট থেকে বাজেয়াপ্তও করেছে।