সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেল থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal )। আবগারি মামলায় ইডির (ED) হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পরেই এই কথা সাফ জানিয়ে দেয় আপ। এই ঘোষণার পরে বিজেপির পালটা, জেলবন্দি মুখ্যমন্ত্রী আসলে সংবিধানের অবমাননা। কিন্তু জেল থেকে কি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালানো যায়? সংবিধান কি সেই অনুমতি দিয়েছে? কেজরির গ্রেপ্তারির পরে এমন প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে ওয়াকিবহাল মহলে।
মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের একাধিক নজির রয়েছে দেশের ইতিহাসে। কয়েকদিন আগেই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন গ্রেপ্তার হন। তবে তাঁর গ্রেপ্তারির ক্ষেত্রে ‘টেকনিক্যালি’ মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেপ্তারি বলা যাবে না। গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই তিনি ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন। অতীতে লালুপ্রসাদ যাদব থেকে জয়ললিতার মতো নেতানেত্রীও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক গ্রেপ্তারির মুহূর্তে তাঁরা কেউই মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না। সেই হিসেবে পদে আসীন অবস্থায় গ্রেপ্তার হওয়া দেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালই।
[আরও পড়ুন: লোকপালের নির্দেশ পেয়েই মহুয়ার বিরুদ্ধে FIR সিবিআইয়ের, চাপ বাড়ল তৃণমূল প্রার্থীর]
গ্রেপ্তারির (Arvind Kejriwal arrested) পর প্রায় ১৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও কেজরির ইস্তফার কোনও সম্ভাবনা নেই। উলটে আপের (AAP) সাফ দাবি, দিল্লির (Delhi) মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন কেজরিই। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী সেটা কি সম্ভব? প্রসঙ্গত, দেশের নির্দিষ্ট কয়েকজনকে বিশেষ রক্ষাকবচ দিয়েছে সংবিধান। রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল ও লেফটেন্যান্ট গভর্নরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্ত চলাকালীন বিশেষ রক্ষাকবচ পাবেন তাঁরা। কিন্তু সেই তালিকায় নেই মুখ্যমন্ত্রীরা। অর্থাৎ যথাযথ আইনি পথেই তদন্ত চলতে পারে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে, সংবিধান থেকে কোনও সুবিধা তিনি পাবেন না।
তবে গ্রেপ্তার হলেই যে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে, এমন ধারাও নেই সংবিধানে। কোনও মামলায় দোষী প্রমাণিত হয়ে সাজা পেলে তবে মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর পদ থেকে বরখাস্ত করা যেতে পারে। তবে দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার কারণে আরও জটিল হয়ে উঠবে গোটা বিষয়টি। মুখ্যমন্ত্রী গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে রাজধানীতে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানাতে পারেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর। আদালতে যদি কেজরিওয়াল স্বস্তি না পান তাহলে আরও জোরদার হবে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি। কেন্দ্র যদি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে, সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী পদের আর গুরুত্ব থাকবে না। তবে সংবিধান অনুযায়ী, জেল থেকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব সামলাতে কোনও বাধা নেই।