সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব বিতর্কে (Hijab row) উত্তাল দেশ। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবারই মুখ খুলেছিলেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন (Taslima Nasreen)। তাঁর বিস্ফোরক মন্তব্য, হিজাব হল সতীত্বের পাহারাদারি করা পোশাক। যা মনে করিয়ে দেয়, মেয়েরা আসলে সম্ভোগের বস্তু। আর এহেন মন্তব্যের জন্য তাঁকে ‘ঘৃণার প্রতীক’ বলে তোপ দাগলেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি (Asaduddin Owaisi)।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন। তাঁর কথায়, ”আমি এমন কোনও মানুষকে উত্তর দিতে চাই না যিনি ঘৃণার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। এমন কোনও মানুষকে উত্তর দেব না যাঁকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল এবং যিনি ভারতে পড়ে রয়েছেন নিজের দেশে আত্মরক্ষা করতে না পেরে। তাই আমি এখানে বসে তাঁকে নিয়ে কোনও আলোচনা করব না।”
[আরও পড়ুন: ‘আপনি তো ২২ মাসেও মুদ্রাস্ফীতি রুখতে পারেননি’, মনমোহনের মোদি-সমালোচনায় সরব নির্মলা]
হিজাব বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ভারতে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ হবে কি না তা নিয়ে মামলা চলছে কর্ণাটক হাই কোর্টে। এই পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার স্পষ্টবক্তা তসলিমা নিজের অবস্থান জানিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার। তিনি বলেন, “একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের পোশাক হওয়া উচিত ধর্মীয় ভেদাভেদহীন। শিক্ষকরা যে পড়ুয়াদের ধর্মীয় পোশাক পরে স্কুল-কলেজে আসতে বারণ করছেন, এর মধ্যে কোনও ভুল নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধর্মচর্চা তথা ব্যক্তিগত ভাবাবেগ অনুশীলনের জায়গা নয়।” তসলিমা আরও বলেন, “বরং স্কুলে শেখানো হয় নাগরিকের অধিকার, লিঙ্গসাম্য, মানবিকতা, আধুনিক মনস্কতা, বিজ্ঞান ভাবনা ইত্যাদি।”
সাক্ষাৎকারে তসলিমা নাসরিন দাবি করেন, হিজাব, বোরখা বা নাকাব নারী নিপীড়নের প্রতীক। তাঁর মতে, “হিজাব, বোরখা, নাকাব আসলে দেগে দেয় যে মেয়েরা যৌন বস্তু ছাড়া কিছু নয়। পুরুষদের থেকে মেয়েদের লুকিয়ে রাখা দরকার, নচেত তারা পুরুষের যৌন আসক্তির শিকার হবে, এই ভাবনা খুবই নিন্দনীয়। এই মনোভাবের দ্রুত অবসান হওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বড় অংশ হিজাবের পক্ষেই রায় দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, হিজাব ইসলাম সম্প্রদায়ের মানুষের সম্মান ও ঐতিহ্যের পোশাক। এই পরিস্থিতিতে তসলিমার এই মন্তব্য বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এবার তসলিমাকে আক্রমণ করলেন ওয়েইসি।