সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ বার সেঞ্চুরি এসেছিল সেই ইডেন গার্ডেন্সে। ক্রিকেটের নন্দনকাননে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পিঙ্ক বল টেস্ট ছিল সেটি। তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় তিন বছর। বিরাট কোহলির (Virat Kohli) ব্যাট থেকে আসেনি শতরান। এই সময়ের মধ্যে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। সমালোচকরা নখ-দাঁত বের করেছেন। রক্তাক্ত হয়েছেন কোহলি। ফর্মে ফেরার জন্য বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তা নিয়েও তাঁর দিকে ধেয়ে আসে নিন্দুকদের সমালোচনার ঝড়।
এশিয়া কাপে (Asia Cup 2022) অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। আফগানিস্তানের (Afghanistan) বিরুদ্ধে কোহলির ব্যাট কথা বলল। রশিদ খানদের রীতিমতো শাসন করে কোহলি মরুশহরে রূপকথা লিখলেন। সেঞ্চুরির খরা কাটালেন তিনি। রং ছড়ালেন ব্যাট হাতে। নিন্দুকদের থামিয়ে দিল কোহলির গাণ্ডীব। টেস্টে শতরান করেছেন, ওয়ানডে-তেও তিনি ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে এর আগে সেঞ্চুরি তিনি করেননি। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এল সেই কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি, সেই মুহূর্ত। ৫৩ বলে শতরানে পৌঁছন কোহলি। ছক্কা হাঁকিয়ে সম্রাটের মতোই ব্যাট শূন্যে তোলেন কোহলি। আর গোটা স্টেডিয়াম তাঁকে কুর্নিশ জানায়। শুধু স্টেডিয়াম কেন, গোটা ক্রিকেট বিশ্বই তো আজ কোহলিতে মজে। ৭১ তম সেঞ্চুরি পেলেন। ১০২০ দিন পরে ফের শতরান করলেন কোহলি।
এদিনের ভারত ও আফগানিস্তানের ম্য়াচ ছিল নিতান্তই নিয়মরক্ষার। দুটো দলই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছে। গতকালই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দারুণ লড়াই করে ম্যাচ হারে আফগানিস্তান। রশিদ খানরা জিতলে ভারতও টুর্নামেন্টে টিকে থাকত। কিন্তু পাকিস্তানের নাসিম শাহের পরপর দুই ছক্কা ছিটকে দেয় আফগানিস্তান ও ভারতকে। ফলে দুই দেশের মধ্যে ম্যাচটা ছিল সম্মানরক্ষারও বটে।
[আরও পড়ুন: NEET’তে বাংলার মেয়ের জয়জয়কার, মহিষাদলের দেবাঙ্কিতার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত পরিবার]
টস জিতে এদিন ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় আফগানিস্তান। রোহিত শর্মা এদিন বিশ্রাম নেন। দলে একাধিক পরিবর্তন আনে ভারত। এশিয়া কাপে আফগানদের বিরুদ্ধেই সেরা ম্যাচটা খেললেন ভারতের ব্যাটাররা। রোহিত না থাকায় নেতৃত্বের আর্মব্যান্ড ওঠে লোকেশ রাহুলের হাতে। এদিন রাহুল ও কোহলি ওপেন করতে নামেন। এশিয়া কাপে রানের মধ্যে ছিলেন না লোকেশ রাহুল। কোহলি অবশ্য এশিয়া কাপে রানে ফেরেন। তবে তা মোটেও কোহলিচিত ছিল না। কারণ কোহলির ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি দেখতে চান সমর্থকরা। এদিন তাঁদের বঞ্চিত করেননি বহু যুদ্ধের সৈনিক।
প্রথমে কোহলি ও রাহুল মিলে ভারতকে শক্ত ভিতের উপরে দাঁড় করিয়ে দেন। লোকেশ রাহুল ব্যক্তিগত ৬২ রানে আউট হন। কিন্তু কোহলির মধ্যে তখন রানের অনন্ত খিদে। মরুশহরের উষ্ণতা ও আর্দ্রতায় যখন ব্যাটাররা ক্লান্ত হয়ে পড়েন, কোহলিকে সেখানে বেশ সতেজ দেখায় এদিন। শেষ পর্যন্ত তিনি ১২২ রানে অপরাজিত থেকে যান। ৬১ বলে ১২২ রানের ঝকঝকে ইনিংস ভারতকে পৌঁছে দেয় রানের পাহাড়ে। তাঁর ইনিংসে সাজানো ছিল ১২টি বাউন্ডারি ও ৬টি ছক্কা। নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষে ভারতের রান ২ উইকেটে ২১২। সূর্যকুমার যাদব মাত্র ৬ রান করে আউট হন। শেষমেশ অপরাজিত থেকে যান ঋষভ পন্থ (২০)। কিন্তু আজ তো কোহলির দিন। যেদিন তিনি খেলেন, সেদিন বাকিদের দিকে কি আর নজর পড়ে! কোহলিই তো শুষে নেন সব আলো।
[আরও পড়ুন: কলকাতার কর্মী সম্মেলনে গরহাজির জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক, দলের সঙ্গে বাড়ছে দূরত্ব?]