সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানুষ মানুষের জন্য। ভূপেন হাজারিকার রাজ্যে কথাটা আরও একবার প্রাসঙ্গিকতা পেল। সৌজন্যে এক জনপ্রতিনিধি। বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে আসামের দুর্যোগ কবলিত এলাকায় অধিকাংশ জনপ্রতিনিধির টিকি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড ক্যামেরার সামনে। এর মধ্যে নীরবে কাজ করে চলেছেন এক বিধায়ক। উত্তর অসমের মারিয়ানির বিধায়ক রূপজ্যোতি কুর্মি নিজের পিঠে বস্তা চাপিয়ে এলাকায় ত্রাণ পাঠাচ্ছেন। এমনকী বাঁধ মেরামতিতে তাঁকে সামনের সারিতে দেখা যাচ্ছে।
[যুদ্ধ বাধলে দশদিনেই শেষ ভারতীয় সেনার গোলাবারুদ, CAG রিপোর্টে চাঞ্চল্য]
বন্যায় ভাসছে আসামের ১৯টি জেলা। অনেকের কাছে এবারের বন্যা নাকি এই দশকের সবথেকে ভয়ঙ্কর। বন্যার জলে যেন ভেসে গিয়েছে রাজ্যের প্রশাসনিক কাঠামো। কয়েক লক্ষ মানুষ বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো রয়েছেন। সিংহভাগ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছয়নি। বিপদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও উধাও হয়ে গিয়েছেন। এই অন্ধকারের মধ্যে কিছুটা আশার আলো জোরহাটে। উত্তর আসামের মারিয়ানি এলাকার বিধায়ক রূপজ্যোতি কুর্মি বিপদ বুঝে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। তাঁর বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় রূপজ্যোতি ত্রাণ নিয়ে নিয়মিত যান। প্রয়োজনে নিজের পিঠে রূপজ্যোতি চাপিয়ে নিচ্ছেন চালের বস্তা। পাশাপাশি বাঁধ মেরামতিতে হাত লাগাচ্ছেন এই কংগ্রেস বিধায়ক। রূপজ্যোতির মা রূপম কুর্মি ছিলেন কংগ্রেসের বিধায়ক এবং প্রাক্তন মন্ত্রী। মায়ের মৃত্যুর পর একটি সংগঠন তৈরি করেন রূপজ্যোতি। সেই সংগঠনের ব্যানারে মানুষের পাশে থাকার শপথ নেওয়া হয়।
রূপজ্যোতি বলছেন, এবারের বন্যা ভয়াবহ আকার নিয়েছে। জল কিছুটা নামলেও মানুষের বিপদ কাটেনি। শতাধিক মানুষের সলিল সমাধি হয়েছে। লক্ষাধিক জলবন্দি। বন্যাদুগর্তদের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মারিয়ানির বিধায়ক। তাঁর আক্ষেপ, প্রতি বছর বন্যা দেখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এলেও আসামের পরিস্থিতি সেই তিমিরে রয়েছে। বিহার, উত্তর প্রদেশে এধরনের ঘটনা ঘটলে সাহায্যের বন্যা বয়ে যেত। কিন্তু আসামের জন্য কারও কিছু মনে হয় না।
[ধর্মান্তরিত না হলে কেটে ফেলা হবে হাত-পা, হিন্দু লেখককে ফতোয়া মৌলবাদীদের]
কেন নিজের পিঠে তুলে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন। উত্তরে রূপজ্যোতি বলছেন, তিনি অন্যদের থেকে আলাদা নন। বিধায়ক হলেও তাঁর পরিচয় মানুষ। মানুষের সঙ্গে থেকে কাজ করারটা তিনি উপভোগ করেন। জলবন্দি দুর্গতরা বলছেন এই অনুভূতিটা অন্যদের মধ্যে থাকলে তাদের দুঃখ থাকত না।
The post অসমে মানবিক মুখ, মাথায় ত্রাণ নিয়ে দুর্গতদের পাশে বিধায়ক appeared first on Sangbad Pratidin.