সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি জননেত্রী। যে কোনও ইস্যু নিয়ে রাস্তায় হাঁটলেই হাজার হাজার মানুষ পা মেলান। আর ইস্যু যদি খোদ মমতাকে (Mamata Banerjee) নিয়েই হয়, তাহলে তো জনসমুদ্র হওয়ারই কথা। কিন্তু মঙ্গলবার গান্ধীমূর্তির পাদদেশে দেখা গেল সম্পূর্ণ অন্য ছবি। নির্বাচন কমিশনের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ধরনায় বসলেন মমতা একাকী। সমর্থকরা তো নয়ই, দলের কোনও নেতাও নেই।
একা হুইল চেয়ারের উপর বসে থাকা মমতার সেই ছবি তাঁর অনুগামীদের জন্য হৃদয়-বিদারক হতে পারে। মনে হতে পারে জীবনের অন্যতম কঠিন এই লড়াইয়ে সঙ্গীহীন মমতা। কিন্তু বাস্তবটা তেমন নয়। মমতার এই একাকী ধরনায় বসাটা সুপরিকল্পিত এবং কৌশলগত। তিনি একেবারেই নিসঙ্গ হয়ে যাননি। বেশ ভেবেচিন্তেই দলের কর্মী-সমর্থকদের নিজের কাছ থেকে দূরে রেখেছেন। এমনকী নিজের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠদেরও কাছে ডাকেননি। মমতার ধরনা মঞ্চের আশেপাশে দেখা যায়নি কোনও বুদ্ধিজীবীকেও। বরং, অনেকটা ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’র মতোই ‘একাকী সত্যাগ্রহে’র পথ বেছে কমিশনের নিষেধাজ্ঞার পালটা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। আর এই সুপরিকল্পিত কৌশল ভোটের ময়দানেও মমতাকে ডিভিডেন্ট দিতে পারে।
[আরও পড়ুন: বাবরি মসজিদ ধ্বংসে অভিযুক্তদের মুক্তি দেওয়া বিচারপতিকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিল যোগী সরকার]
কিন্তু একাকী ধরনার পিছনে কী পরিকল্পনা মমতার? আসলে নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নিষেধাজ্ঞার অর্থ, গতকাল রাত আটটা থেকে আজ রাত আটটা পর্যন্ত কোনওরকম ভোটপ্রচারে অংশ নিতে পারবেন না তিনি। এই অবস্থায় যদি তিনি সদলবলে ধরনায় বসেন, তাহলে তাঁর ধরনাস্থলেও বহু মানুষের জমায়েত হতে পারত। এবং সেই ধরনাস্থল জনসভার আকার নেওয়ার সম্ভাবনা ছিল। সেক্ষেত্রে, ফের কমিশনের বিধিভঙ্গের অভিযোগ ওঠার একটা সম্ভাবনা ছিল। ভোটের মুখে সেটা আর চাইছেন না তৃণমূল নেত্রী। তাছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা ধরনায় বসে, এই ছবি ভোটারদের মধ্যে সহানুভূতি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যেসব ভোটার দোলাচলে আছেন, তাঁদের মনে মমতার একাকী সত্যাগ্রহের এই ছবি প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত তৃণমূল (TMC) শীর্ষনেতৃত্বের। আর সেটার প্রভাব পড়তে পারে ভোটবাক্সেও। তাছাড়া, ধরনা মঞ্চে যেভাবে মমতা নীরবে ছবি আঁকছেন, সেটাও বেশ বার্তাবহ। ধরনামঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রীর তুলির টানে ফুটে উঠেছে রক্তপলাশের ছবি। মমতা যেন বলতে চাইলেন, প্রতিবাদ হোক রক্তপলাশে রক্তজবায়…।