ধীমান রায়, কাটোয়া: রবিবারই রাজ্যে ভোট গণনা (Assembly Polls 2021)। তার আগেই কাউন্টিং এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক চলাকালীন বিজেপি-তৃণমূল তুমুল সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) জেলার কাটোয়া এলাকা। এই অতিমারী পরিস্থিতিতে করোনাবিধি উপেক্ষা করেই দুই দলের কর্মী-সমর্থকরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। উত্তেজনা সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় পুলিশ আধিকারিকদের। শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায় বৈঠকও।
শনিবার কাটোয়া কলেজে কাটোয়া মহকুমা এলাকার তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট এবং কাটোয়ার এজেন্টদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। গণনা প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা, গণনাকেন্দ্রে করোনাবিধি বজায় রাখা এবং যাতে কাউন্টিং এজেন্টদের সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয় তা নিয়ে আলোচনা করা ছিল এই বৈঠকের উদ্দ্যেশ্য। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর বারোটা নাগাদ কাটোয়ার সংহতি মঞ্চে বৈঠক শুরু হয়। প্রায় ঘন্টাখানেক বৈঠকে আলোচনা চলার পরই শুরু হয় ঝামেলা। সংহতিমঞ্চ প্রেক্ষাগৃহের মধ্যে কেতুগ্রামের বিজেপি প্রার্থী মথুরা ঘোষ এবং কাটোয়া পুরসভা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সুদিপ্তময় ঘোষ প্রথমে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। তারপরেই দু’দলের এজেন্টদের মধ্যে শুরু হয় বচসা ও হাতাহাতি। এরপর সেই ঝামেলা রাস্তায় এসে গড়ায়। লাঠিসোঁটা নিয়ে দুই দলের এজেন্টদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে কাটোয়া থানার বিরাট পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। তারা পরিস্থিতি সামাল দেয়।
[আরও পড়ুন: টিকিট না পাওয়ায় খুনের পরিকল্পনা! মালদহের বিজেপি প্রার্থীকে গুলির ঘটনায় ধৃত দলীয় নেতা]
কেতুগ্রামের বিজেপি প্রার্থী মথুরা ঘোষের অভিযোগ, “বৈঠকের সময় মধ্যাহ্নভোজের বিরতি নিয়ে যখন মতামত নেওয়া হচ্ছিল তখন আমাদের বলতে বাধা দেয় তৃণমূলের লোকজন। আমরা মিটিং ছেড়ে বেড়িয়ে আসছিলাম। তখন আমাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হয়। মারধর করে।” তৃণমূল কংগ্রেসের এক কাউন্টিং এজেন্ট তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর সুদীপ্তময় ঘোষের অভিযোগ, “বৈঠকে আলোচনার সময় আমার ওপর বিজেপি প্রার্থী মথুরা ঘোষ ও তাঁর দলের লোকজন চড়াও হয়। তা থেকেই এই ঝামেলা বাধে।” উল্লেখ্য, কাটোয়া মহকুমার তিন বিধানসভা কেন্দ্র মিলে এক হাজারের বেশি বুথ রয়েছে। এদিন সব দল মিলে কয়েকশো কাউন্টিং এজেন্টদের নিয়ে বৈঠক হচ্ছিল। এই অতিমারী পরিস্থিতিতে এত লোকজন নিয়ে কেন বৈঠক হচ্ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “এই অবস্থার মধ্যে এত লোকজন আসা ঠিক হয়নি।” ঘটনার পর বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও।