সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্র কুচকুচে কালো। চারপাশে লালচে-হলুদ আলোর ছটা। একঝলকে দেখলে তার মহিমা বোঝার উপায় নেই। বরং অনেক রহস্যে ঘেরা বলেই মনে হতে পারে। জানতে ইচ্ছে করছে তো কীসের কথা বলা হচ্ছে? আমাদের সৌরজগতের ছায়াপথ অর্থাৎ আকাশগঙ্গার কেন্দ্রে থাকা কৃষ্ণগহ্বরের (Black Hole) ছবি প্রথমবার প্রকাশ্যে আনলেন জ্য়োতির্বিজ্ঞানীরা। ইন্টারন্যাশনাল কনসর্টিয়ামের তরফে এই ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। আটটি রেডিও টেলিস্কোপের (Radio Telescope) সাহায্যে তোলা ছবিকে একসঙ্গে এনে এই প্রথম ব্ল্য়াক হোলের সামগ্রিক অবয়ব সামনে আনা হল।
বিজ্ঞানের পরিভাষায় – সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল (Supermassive Black Hole)। এই কৃষ্ণগহ্বরটি আমাদের ছায়াপথের কেন্দ্রে রয়েছে। সেটিই শক্তির মূল উৎস। এর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা গিয়েছিল আগে। নাম ‘স্যাজিটেরিয়াস এ’। এবার তার ছবি প্রকাশ্যে এল। জানা গিয়েছে, ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ, যা কিনা আটটি টেলিস্কোপের সমাহার, তাতেই ধরা পড়েছে ‘স্যাজিটেরিয়াস এ’-র চিত্র। যদিও সে ছবি বিশেষ স্পষ্ট নয়। বেশ খানিকটা আবছা। তবু অবয়ব বোঝা যাচ্ছে। লাল-হলদে ছটার মাঝে কালো বিন্দু। ওটাই কৃষ্ণগহ্বরের মূল, অর্থাৎ এই কেন্দ্রেই মৃত্যু হয় সমস্ত আলোক তরঙ্গের। তাই তা আঁধারঘেরা।
[আরও পড়ুন: দাবদাহের মাঝেই স্বস্তির খবর, দেশে আগাম বর্ষার পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের]
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এর আগেও বহুবার ব্ল্যাক হোলের ছবি ধরার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তা এতটাই নড়বড়ে, বিজ্ঞানীদের ভাষায় ‘জাম্পি’, যে ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। তবে এবার ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ সেই অসাধ্য সাধন করে ফেলল। একসঙ্গে আটটি রেডিও টেলিস্কোপ তাক করে ছিল ‘স্যাজিটেরিয়াস এ’-র দিকে। তাতেই তার চেহারা তুলে ধরা সম্ভব হল। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশের ব্যাখ্য়া, ঠিক গহ্বরটি নয়, রেডিও টেলিস্কোপে যা ধরা পড়েছে, তা আসলে ওই গহ্বরকে ঘিরে থাকা জ্বলন্ত গ্যাস আর আলোর ঝলকানি।
[আরও পড়ুন: মাছের আড়তের আড়ালে কোটি কোটি বেআইনি অর্থ লেনদেন! অশোকনগরে তল্লাশি ইডির]
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, মহাকাশের বেশিরভাগ ছায়াপথের (Galaxy) কেন্দ্রেই রয়েছে বিশাল কৃষ্ণগহ্বর। সেটাই সম্ভবত তার মূল শক্তি। আসলে ব্ল্যাক হোলে এমন বিপুল আকর্ষণ যেখান থেকে আলোর মতো গতিসম্পন্ন কণাও বেরিয়ে যেতে পারে না। এর কাছাকাছি এলে ভিতরে ঢুকে যায় আলো। তাই তা এত ঘন কালো। কিন্তু তার আকর্ষণে চারপাশে থেকে যায় এক আলোর বৃত্ত। সেই আলোকিত অংশই ধরা পড়েছে ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপে।