স্টাফ রিপোর্টার: প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন। তারপর আর টিকাকেন্দ্রমুখো হননি। এক দু’জন নয়। শহর কলকাতায় (Kolkata) এই সংখ্যা ২ লক্ষ ৮২ হাজার। বিপুল এই অঙ্ক দেখে চোখ কপালে উঠছে চিকিৎসকদের। কেন দ্বিতীয় ডোজ নিতে অনীহা?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ শহরতলির সন্তোষপুরের বাসিন্দা টিকার (COVID-19 Vaccine) প্রথম ডোজ নিয়েছেন। তারপর আর টিকাকেন্দ্রে যাননি। তাঁর যুক্তি, টিকা নিয়েও করোনা হচ্ছে। ফি বছরই নতুন নতুন স্ট্রেন আসছে। টিকা নিয়েও যদি অসুখ হয়, তাহলে আর নেওয়ার কী মানে? এমন ধারণাকে আত্মঘাতী বলছেন চিকিৎসকরা। পিয়ারলেস হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানিয়েছেন, টিকার একটি ডোজ নেওয়ার কোনও যৌক্তিকতা নেই। কেউ টিকা নেননি। কেউ নিয়েছেন। যাঁরা একটি ডোজ নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, তাঁরাই বিপদের কারণ। ভাইরাস এঁদের শরীরে ঢুকে মিউট্যান্ট করে ক্ষতিকর কোনও চেহারা নিতে পারে।
[আরও পড়ুন: সাবধান! কলকাতায় ফাঁদ পাতছে হায়দরাবাদ গ্যাং, অ্যাপ ডাউনলোড করতেই সাফ অ্যাকাউন্টের কোটি টাকা]
টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ৪ মাস কেটে গেলেও আসেননি আর। এমন ব্যক্তিদের টিকার ‘ওভারডিউ’হিসাবে ধরছে রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ওভারডিউ-এ ১ নম্বরে তিলোত্তমা। দুই এবং তিন নম্বরে যথাক্রমে মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ। মালদহে টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে আর দ্বিতীয় ডোজ নিতে আসেননি ২ লক্ষ ১৫ হাজার মানুষ। মুর্শিদাবাদে তা ২ লক্ষ ১০ হাজার। যাঁরা আর টিকা নিতে আসেননি তাঁদের ভ্যাকসিন দিতে বদ্ধপরিকর স্বাস্থ্য দপ্তর।
টিকা এক্সপ্রেসের মাধ্যমে জেলার গ্রামীণ এলাকায় সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায়, অনেকেই এমন মোবাইল নম্বর দিয়ে প্রথম ডোজ নিয়েছেন যে নম্বর আদৌ টিকা প্রাপকের নিজের নয়। কোথাও বা নম্বরের অস্তিত্বই নেই। ফলে চেয়েও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না স্বাস্থ্য দপ্তর। পিয়ারলেস হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক জানিয়েছেন, প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ নেওয়া থাকলে করোনায় মৃত্যুর সম্ভাবনা সামান্য। চিকিৎসকের ব্যাখ্যা, টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পরেও যাঁরা মারা যাচ্ছেন তাঁদের নিয়ে গবেষণা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, কেউ অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, কারও হৃদযন্ত্রের সমস্যা, কারও বা ক্যানসারের মতো অসুখ রয়েছে। এইসমস্ত কোমর্বিডিটির কারণেই টিকার দুটো ডোজ নেওয়ার পরেও মৃত্যু হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: ‘সনাতনী হিন্দুটা কী?’, নাম না করে শুভেন্দুকে খোঁচা দিলীপ ঘোষের আপ্ত সহায়কের]
এদিকে কোভিড সংক্রমণের পরিবর্তিত এলাকাগুলি রিভিউ করে মঙ্গলবার নতুন ২৯টি কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করেছেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। নয়া তালিকায় উত্তর কলকাতার ৩ নম্বর বরোয় সাতটি, দক্ষিণ কলকাতার আট নম্বর বরোয় পাঁচটি, নয় নম্বর বরোয় আটটি, ১০ ও ১৪ নম্বর বরোয় চারটি করে এবং ১৩ নম্বর বরোয় একটি করে কনটেনমেন্ট জোন চালু হয়েছে। প্রতিটি কনটেনমেন্ট জোনে স্যানিটাইজেশনে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন পুরকর্তারা।