দুলাল দে: অদ্ভুত দুই অবস্থানে থেকে শনিবার ডার্বি খেলতে নামছে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) এবং এসসি ইস্টবেঙ্গল (SC East Bengal)। ডার্বি শুরুর আগে একটা দিক থেকে ভীষণই সাজুয্য দুই দলের মধ্যে। হাবাসের পরিবর্তে কোচ হয়ে এসেছেন ফেরান্দো (Juan Ferrando)। আর এদিকে, শুরুতে ডিয়াজ, তারপর অন্তর্বতীকালীন কোচ রেনেডির জায়গায় এসেছেন মারিও রিভেরা (Mario Rivera)।
এই তথ্যগুলি ছাড়া দু’দলের মধ্যে সাযুজ্য খুব একটা খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে এটা ঠিক যে, খাতায় কলমে এসসি ইস্টবেঙ্গলের থেকে এটিকে মোহনবাগান অধিকতর শক্তিশালী দল হলেও, যদি এইমরশুমে ডিফেন্সের অবস্থা বলি, তাহলে এ বলবে, আমায় দেখ। ও বলবে, আমায় দেখ। পরিসংখ্যান বলছে, এই মরশুমে ১৩টা ম্যাচ খেলে ২৫ গোল খেয়ে বসে আছে লাল-হলুদ ডিফেন্স। সেখানে এটিকে মোহনবাগান ১০ ম্যাচে খেয়েছে ১৮টি গোল। অর্থাৎ গোল খাওয়ার গড়ে একদল অপর দলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়চ্ছে।
[আরও পড়ুন: নিজের ভালর জন্য ক্রিকেট থেকে সাময়িক বিরতি নেওয়া উচিত কোহলির! পরামর্শ দিলেন শাস্ত্রী]
তবে প্রথম লেগের ডার্বির সময় দু’দলের যা অবস্থা ছিল, যত দিন গিয়েছে, তত কিন্তু অবস্থাগত পরিবর্তন হয়েছে দু’দলের। প্রথম লেগে লাল-হলুদকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার সময় তখন আত্মবিশ্বাসে উড়ছেন রয় কৃষ্ণরা। তারপর ক্রমশ পিছোতে পিছোতে আপাতত লিগ টেবিলের আটে। তবে শুরুর দিকে লাল-হলুদের যে রক্ষণকে নিয়ে প্রতিপক্ষ দলগুলি ছেলেখেলা করছিল, সেই রক্ষণই রেনেডি সিংয়ের হাতে পড়ে প্রথম লেগের হায়দরাবাদ ম্যাচ থেকে কিছুটা বদলে গিয়েছিল। কিন্তু মারিওর হাতে পড়ে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ফিরে এসেছে সেই ঢিলেঢালা লাল-হলুদ ডিফেন্স।
রক্ষণ ছেড়ে আক্রমণ ধরলে, এক্ষেত্রে এটিকে মোহনবাগান কিন্তু অনেকটা এগিয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গলের থেকে। ১০ ম্যাচে গোল করেছে ২০-টি। সেখানে ১৩ ম্যাচ খেলে লাল-হলুদের গোল মাত্র ১৩-টি। রেনেডি দায়িত্ব নেওয়ার আগে ডিয়াজের সময় পুরো দলটাই অগোছালো ছিল। রেনেডি এসে ডিফেন্স ঠিক করলেন। মারিও এসে আক্রমণে জোর দিলেন। কিন্তু একটা ম্যাচ যেতে না যেতেই বেআব্রু হয়ে গিয়েছে পুরো দলের চেহারাটা। আর এখানেই ডার্বির আগে মূল ভয়। ডার্বিতে নামার আগের ম্যাচেই লাল-হলুদ বাহিনী কবে ৪ গোল খেয়েছে, মনে করা দুষ্কর। উল্টোদিকে, পাঁচ ম্যাচের নির্বাসন কাটিয়ে ডার্বিতে দলে ফিরছেন এটিকে মোহনবাগানের তারকা মিডফিল্ডার হুগো বুমোস। বলছিলেন, “শেষ ম্যাচে লাল-হলুদ ৪ গোল খেয়েছে মানে আমাদের সুবিধে হয়ে গেল, এরকম নয়। কিন্তু প্রথম লেগের মতো এবারও ডার্বি জিতব আমরা।”
বুমোসের এরকম দাবি করার কারণ হল, এটিকে মোহনবাগানের যে কেউ গোল করে দিতে পারেন। দলের এক নম্বর স্ট্রাইকার রয় কৃষ্ণ হলেও, আপাতত দলের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় কিন্তু তিনি নেই। আপাতত রয় কৃষ্ণর গোল সংখ্যা ৪। ৫ গোল করে রয় কৃষ্ণর আগে রয়েছেন হুগো বুমোস। লিস্টন কোলাসোরও গোল সংখ্যা ৫।
সেখানে এসসি ইস্টবেঙ্গলে সর্বোচ্চ গোল সংখ্যা দু’টি। আর পেরোসেভিচ ছাড়া আরও তিনজন ফুটবলার, হাওকিপ, আমির, নাওরেম দু’টো করে গোল করেছেন। এরমধ্যে আমিরকে ছেড়ে দিয়ে নেওয়া হয়েছে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সোতাকে। ফলে গোল করার দিকে রিভেরার দলের থেকে জুয়ান ফেরান্দোর দল অনেকটাই এগিয়ে।
[আরও পড়ুন: রোহিতের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ভারতীয় দল ঘোষিত, নির্বাচকদের একাধিক সিদ্ধান্তে প্রশ্ন]