স্টাফ রিপোর্টার: বহু ব্যবহারে ক্লিশে হয়ে গিয়েছে শব্দটা। তবু না টেনে এনে পারা যাচ্ছে না। কী শব্দ? কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। সকলেই জানে, লিগ টেবিলে শীর্ষে রয়েছে হায়দরাবাদ (Hyderabad)। শুধু এইটুকু তথ্য এই দলের কাছে যথেষ্ট নয়। সাম্প্রতিককালে প্রচুর গোল করছে। ওগবেচের মতো গোলমেশিন রয়েছে দলে। ২৪-২৫ বছরের তরুণ-তুর্কির মতো খেলছেন যিনি। তাই আজ ধরেই নেওয়া যায় আক্রমণের ঢেউ এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে আছড়ে পড়বে। কারণ, এটিকে মোহনবাগানও (ATK Mohun Bagan) আক্রমণাত্মক খেলতে অভ্যস্থ।
সবুজ-মেরুন শিবিরের কোচ জুয়ান ফেরোন্দোকে (Juan Ferrando) জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, হায়দরাবাদের আক্রমণকে সামাল দেবেন কী করে? তার জবাবে ফেরান্দো জানিয়ে দিয়েছেন, “আক্রমণই হল নিজেদের রক্ষণকে সামাল দেওয়ার ভাল উপায়। যদি ক্রমাগত আমরা আক্রমণে উঠতে পারি তাহলে রক্ষণও শক্তপোক্ত হতে বাধ্য।” প্রথম লেগে হায়দরাবাদের বিপক্ষে ডেভিড উইলিয়ামস আইএসএলের সবচেয়ে দ্রুততম গোল করেছিলেন। তবু সবুজ-মেরুন শিবির ম্যাচ ড্র করে ফিরেছিল।
[আরও পড়ুন: আইএসএলে ব্যর্থতা অব্যাহত, ওড়িশার কাছে হারল এসসি ইস্টবেঙ্গল]
অথচ এই মুহূর্তে ফেরান্দো বাহিনীর না জিতে উপায় নেই। সামনে পড়ে আছে ছ’টা ম্যাচ। যদি পরের দু’টো ম্যাচ না জেতে তাহলে লিগ শীর্ষে যাওয়া কঠিন হবে। সেকথা স্বীকার করে নিয়ে স্প্যানিশ কোচ জানিয়ে দিলেন, “অস্বীকার করব না, পরের দু’টো ম্যাচ আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই দু’টো ম্যাচ জিতি তাহলে লিগ টেবিলের শীর্ষে পৌঁছে যাব। তবে এসব কথা ফুটবলারদের মাথায় ঢোকাতে চাইছি না। তাহলে ওরা চাপে পড়ে যাবে। এখন লক্ষ্য পরবর্তী ম্যাচ। এটাও ঠিক বাকি ছ’টা ম্যাচের দলগুলো বেশ কঠিন।”
গতম্যাচে কিয়ান নাসিরিকে শেষ পাঁচ মিনিট খেলানোয় প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল। ফেরান্দো কিন্তু এসব মাথাতেই রাখতে চাননা। তাঁর সাফ কথা, কিয়ানকে বেশিক্ষণ খেলানোর প্রশ্নই ওঠে না। প্রথমত, কিয়ানের হাঁটুতে চোট রয়েছে। দুই, দলের স্টাইলের সঙ্গে এখনও পুরোপুরি তিনি মানিয়ে নিতে পারেননি। তাই প্রয়োজন ছাড়া কিয়ানকে নামাতে রাজি নন স্প্যানিশ কোচ। সেই সঙ্গে এ-ও ভেবেছেন কোচ, অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক খেলার কথা তিনি কখনও ভাববেন না। তিনি মনে করছেন, দলের উপযোগী যেসব ফুটবলার রয়েছে তাতে আক্রমণাত্মক খেলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
প্রতিপক্ষ দলকে নিয়ে তিনি যে চিন্তিত তা-ও বুঝিয়ে দিলেন ফেরান্দো। নাহলে বলবেন কেন, “দলগত খেলার চেষ্টা করে ওরা। তাছাড়া ওগবেচের মতো ফরোয়ার্ড রয়েছে। এই মুহূর্তে দুরন্ত ফর্মে আছে। প্রায় প্রতি ম্যাচে গোল করছে। রক্ষণে হুয়ানানও ভাল খেলছে। ফলে রক্ষণও সমান তালে সাহায্য করছে। মাঝমাঠে আবার তেমনই রয়েছে জোয়াও ভিক্টর। আকাশ মিশ্র ডিপ-ডিফেন্সের মতো খেলে। ফাঁকা জায়গাকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা জানে এডু। তাই এই দলটা ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এগোচ্ছে। সুতরাং এদের কাছ থেকে তিন পয়েন্ট পাওয়া সহজ কথা নয়।”
তবে ওগবেচেকে আলাদা করে নজর রাখতে রাজি নন তিনি। ফেরান্দো মনে করছেন, “শুধু ওগবেচেকে ভেবে লাভ কিছু হবে না। ওদের দলে বেশ কয়েকজন ভাল মানের ফুটবলার রয়েছে। তাদের সকলকে নিয়ে ভাবছি। তাই তাদেরকেও না আটকালে কোনও লাভ হবে না।” হায়দরাবাদের বিপক্ষে আলাদা রকমের পরিকল্পনা ভেবে রেখেছেন তিনি। “আমাদের খেলার স্টাইল সকলে জানে। তাকে তো রাতারাতি পাল্টানো যায় না। আমাদের একটাই লক্ষ্য হবে, পায়ে বল রেখে জায়গা তৈরি করা। সেই জায়গাকে কাজে লাগিয়ে আক্রমণে ওঠা। ওড়িশা বা এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে যেমন খেলেছিলাম সেইভাবে খেলব।”