সুকুমার সরকার, ঢাকা: তীব্র দাবদাহের জ্বালা ছিলই। তার উপর দোসর হয়ে এল কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব। বাংলাদেশের (Bangladesh) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচ জেলায় কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কমপক্ষে ৩৩ জন জখম হয়েছেন এবং দুজন নিখোঁজ বলে খবর। ঝড়ে ধসে পড়েছে কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ি। গত কয়েকদিন ধরে পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা চুয়াডাঙা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও যশোরের আংশিক এলাকায় ৪০ ডিগ্রির উপর তাপমাত্রা বইছে। এতে জনজীবনে হাসফাঁস অবস্থা দেখা দিয়েছে। কিন্তু রবিবার কালবৈশাখীতে সেই যন্ত্রণা জুড়ালেও নেমেছে বিপদ।
দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হওয়া ঘূর্ণিঝড়ে (Cyclonic Storm)এই তাণ্ডবলীলা ঘটে। ভোলার মনপুরা ও লালমোহন, পিরোজপুর, বাউফল, বাগেরহাট ও ঝালকাঠিতে এই ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। পিরোজপুরে সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ ঝড় শুরু হয়। এই ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের দাপটে আরও একজনের বৃদ্ধের মৃত্যুর (Death) খবর মিলেছে। এতে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন। জেলার ওপর দিয়ে ১৫ মিনিট ঝোড়ো বাতাস বয়ে যায়। পুরো জেলার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শত শত গাছ উপরে পড়ে কয়েকশত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পৌরসভার প্রায় সব সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
[আরও পড়ুন: ভালোবাসার প্রতিদান! চেঁচিয়ে লুটপাট রোখার চেষ্টা, চারপেয়েকে পিটিয়ে ‘খুন’ দুষ্কৃতীদের]
রবিবার বেলার দিকে ভোলা জেলার মনপুরা ও লালমোহনে দুপুরের দিকে আকস্মিক ঝড় শুরু হয়। এতে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘর চাপা পড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বজ্রপাতেও একজন মারা গিয়েছেন। মনপুরায় দুপুর ১২টা নাগাদ ঝড়ের তাণ্ডবে দাসের এলাকায় ছয় মৎস্যজীবী-সহ একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গিয়েছে। যাত্রীদের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও ট্রলারটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। ভোলার জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান জানিয়েছেন, নিহতের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা করে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত তিন উপজেলায় ১৬ টন চাল তাৎক্ষণিক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাউফল থানার ওসি সনৎ কুমার গাইন হতাহতের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিখোঁজদের উদ্ধার ও অনুসন্ধানে কাজ চলছে।
[আরও পড়ুন: ‘একেকটা ভোট ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য’, দেবের সমর্থনে রোড শো থেকে বললেন অভিষেক]
এদিকে বাগেরহাটে ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ ও বিলবোর্ড পড়ে একজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। সকাল ৯টা ৪০ থেকে ১০টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ঝড়ে অন্তত দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাগেরহাটের জেলা শাসক মহম্মদ খালিদ হোসেন জানিয়েছেন, কচুয়া উপজেলায় বজ্রপাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আকস্মিক ঝড়ে বেশ কিছু ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ক্ষতিপূরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝালকাঠির দুই উপজেলায় ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। সদর উপজেলার শেখেরহাট, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন এবং কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ঝড় বয়ে যায়।