অর্ণব আইচ: সরষের মধ্যেই কি ভূত? এটিএম (ATM) জালিয়াতি কাণ্ডে এখন এই প্রশ্নটাই উঠছে। জালিয়াতদের সন্ধান চালানো হচ্ছে। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগকারী সংস্থার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ। তার মূল কারণ ‘গাফিলতি’। সংস্থাটি বিদেশি হলেও তার কয়েকজন ভারতীয় কর্তাকেই ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে লালবাজার। এর পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার বিরুদ্ধে চিন্তাভাবনা করবেন লালবাজারের কর্তারা। এদিকে, জালিয়াতদের সন্ধানে ইতিমধ্যেই দিল্লি ও ফরিদাবাদ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের একটি টিম দিল্লি ও ফরিদাবাদে যাচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার অন্তত দশটি এটিএমে হানা দিয়েছে জালিয়াতরা। নতুন পদ্ধতিতে তারা তুলে নিচ্ছে টাকা। সোমবার পর্যন্তও সাতটি এটিএম থেকে দু’কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর পর তার সঙ্গে যোগ হয়েছে আরও তিনটি। ফলে প্রায় আড়াই কোটি টাকার জালিয়াতি হয়েছে বলেই সন্দেহ পুলিশের। কিন্তু আরও কিছু এটিএমে জালিয়াতির সম্ভাবনা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত যে, নতুন পদ্ধতিতে এটিএমের বাইরের আবরণ খুলে কোনও ডিভাইস বসিয়ে ম্যালওয়্যারের সাহায্যে তুলে নেওয়া হচ্ছে টাকা। এই ঘটনায় যে বেসরকারি ব্যাংকের এটিএমের রক্ষণাবেক্ষণ যে সংস্থাটি করে, সেই সংস্থাটিই অভিযোগ করেছে। এই বেসরকারি ব্যাংকটি পাঁচটি সংস্থাকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছে। এর মধ্যে একটি সংস্থা হচ্ছে ওই বিদেশি বহুজাতিক সংস্থাটি। এখনও পর্যন্ত দিল্লি, গাজিয়াবাদ, ফরিদাবাদ থেকে শুরু করে কলকাতার যতগুলি এটিএমে এই জালিয়াতি হয়েছে, প্রত্যেকটি রক্ষণাবেক্ষণ করে এই বিদেশি সংস্থাটিই।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বলি আরও ১, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু প্রৌঢ়ার]
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এটিএমগুলির সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়েছে জালিয়াতদের চেহারা। যদিও তাদের সন্ধান মেলেনি। তাদের সন্ধানে চলছে পুলিশের তল্লাশি। রাস্তায় ট্রাফিকের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে একটি গাড়ির ছবি। সেই গাড়িটি জালিয়াতদের কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, লালবাজারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই গ্যাংটি বাইরের। সেই ক্ষেত্রে ফরিদাবাদের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফরিদাবাদে গ্যাংয়ের একজন ধরাও পড়েছে। বাকিরা এসে এই জালিয়াতি করেছে কলকাতায়। জানা গিয়েছে, ফরিদাবাদের মুজেসর থানা এলাকার সেক্টর ২৮ অঞ্চলের একটি একটি এটিএম কাউন্টারের দু’টি যন্ত্র থেকে মোট ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। সেই কারণে ফরিদাবাদের পুলিশের সঙ্গে লালবাজারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।