দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: অসুস্থ অবস্থায় তিরিশ মিনিট রাস্তার পাশে ফুটপাথে পড়েছিলেন এক মহিলা। জ্ঞান হারিয়েছিলেন তিনি। পথচারীরা উঁকি মেরে যে যার কাজে চলে যাচ্ছিলেন। ঘটে যেতে পারত বড় দুর্ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে ‘দেবদূতে’র মতো এগিয়ে এলেন স্থানীয় অটো চালকরা। তাঁদের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন ক্যানিং (Canning) এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, ক্যানিং থানার অন্তর্গত ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর রেদোখালি গ্রামের বাসিন্দা প্রতিমা সরদার। তাঁর বাপের বাড়ি ক্যানিংয়ের গোপালপুর পঞ্চায়েতের বদুকুলা গ্রামে। দুই সন্তান রয়েছে। ৫ বছর আগে মহিলার স্বামী সুদর্শন সরদারের মৃত্যু হয়। তখন থেকেই সংসারের হাল ধরেন প্রতিমা সরদার। বর্তমানে কলকাতার ঢাকুরিয়াতে পরিচারিকার কাজ করেন প্রতিমাদেবী। প্রতিদিনই প্রায় ১৫ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ক্যানিংয়ে আসেন। সেখান থেকে ট্রেনে ঢাকুরিয়া যেতেন।
[আরও পড়ুন: পরকীয়ার পরিণতি! প্রেমিকার বরকে দেখেই পাঁচতলার ফ্ল্যাট থেকে ঝাঁপ, জয়পুরে মর্মান্তিক মৃত্যু যুবকের]
অন্যান্য দিনের মতোই বুধবার সকালে কলকাতায় গিয়েছিলেন প্রতিমাদেবী। সন্ধে ছ’টা নাগাদ ক্যানিংয়ে ফিরে সাইকেল চালিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। ক্যানিং-বারুইপুর অটোস্ট্যান্ডে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাইকেল থেকে নেমে রাস্তার ফুটপাথে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারান। প্রায় আধঘণ্টা অসহায়ভাবে পড়ে ছিলেন প্রতিমা। কেউই সাহায্যের হাত বাড়াননি বলে অভিযোগ। সেই সময় এগিয়ে আসেন অটোচালক দুলালচন্দ্র সাউ-সহ অন্যান্য অটোচালকরা। তাঁরাই প্রতিমাকে উদ্ধার করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান।
জ্ঞান ফেরার পর হাসপাতালে শুয়ে প্রতিমা সরদার জানান, “কলকাতা থেকে কাজ সেরে ক্যানিংয়ে ফিরেছিলাম। বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছিল। অটোস্ট্যান্ডে পড়ে যাই। তারপর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরতেই জানতে পারি, ক্যানিংয়ের অটোচালক দাদারা আমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভরতি করিয়েছেন। দাদারা পাশে না দাঁড়ালে আমি হয়ত মারা যেতাম। আমার পাশে এভাবে দাঁড়ানোর জন্য তাঁদেরকে ডেকে ভাইফোঁটা দেব।” অটোচলক দুলালচন্দ্র সাউ জানিয়েছেন, “কেউ বিপদে পড়লে তার পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মনে করি। তেমনভাবে ওই দিদির পাশে দাঁড়িয়েছি। তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন শুনে ভালো লাগছে।”