সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শতাব্দী প্রাচীন মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট রামালালাকে বিতর্কিত জমির মালিক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ৩ মাসের মধ্যে ট্রাস্ট গঠনের মাধ্যমে মন্দির তৈরির বন্দোবস্ত করারও নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদিকে, মুসলিমদের পক্ষে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে অযোধ্যারই অন্য কোনও জায়গায় পাঁচ একর জমির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে নিজেদের জয় হিসেবেই দেখছে হিন্দু সম্প্রদায়। অন্যদিকে, মুসলিমদের একাংশ সুপ্রিম নির্দেশে একেবারেই সন্তুষ্ট নয়। এখন প্রশ্ন হল, এর রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া বুঝতে গেলে, এই রায়ের মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব বুঝে নেওয়া দরকার। প্রথমত, বিজেপি সরকারের আমলে মন্দির তৈরি হচ্ছে। তাই এই রায়ের সুবিধা সরাসরি ভোটবাক্সে পেতে পারে গেরুয়া শিবির। যারা হিন্দুত্ববাদে বিশ্বাসী বা যারা হিন্দুত্ববাদের জন্য গেরুয়া শিবিরকে সমর্থন করেন, তাঁদের মধ্যে এই ধারনা আরও স্পষ্ট হবে যে, বিজেপিই হিন্দুত্ববাদের রক্ষাকর্তা। দ্বিতীয়ত যে মুসলিমরা ইতিমধ্যেই বিজেপির প্রতি বীতশ্রদ্ধ, তাঁদের গেরুয়া শিবিরের প্রতি অশ্রদ্ধা আরও বাড়বে।
[আরও পড়ুন: ‘খয়রাতির ৫ একর জমি চাই না’, অযোধ্যার রায় নিয়ে বিস্ফোরক ওয়াইসি]
এর প্রভাব ভোটব্যাংকে কীভাবে পড়বে? প্রথমত, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাম মন্দির তৈরি হলে তাঁর সুবিধা গেরুয়া শিবির পাবেই। কিন্তু, এই রায় এমন একটা সময়ে প্রকাশিত হল, যার আশেপাশে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনও নির্বাচন নেই। কাছেপিঠে ভোট বলতে, দুটি ছোট রাজ্যে। এক ঝাড়খণ্ড, দুই দিল্লি। দুই রাজ্যেই লড়াইয়ে আছে বিজেপি। দিল্লিতে মন্দির তৈরির কতটা প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে সংশয় আছে। তবে, ঝাড়খণ্ডে এই রাম মন্দিরের প্রভাব পড়বে।
আগামী বছরের শেষের দিকেই অবশ্য বিহারে মহাগুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। তাতে মন্দির তৈরির হাতেগরম প্রভাব পড়বে কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকলেও কিছুটা সুবিধা যে গেরুয়া শিবির পাবে তাতে সংশয় নেই। ২০২১-এ বাংলার রাজনীতিতেও এর আংশিক প্রভাব পড়তে চলেছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এরাজ্যে যে নব্য হিন্দুত্ববাদীদের উদয় হয়েছে তাঁরা যে মন্দির রায়ের পর আরও সক্রিয় হয়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য।
[আরও পড়ুন: অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে ছিল মন্দিরই? সাতটি প্রমাণ তুলে ধরলেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা]
এবার আসা যাক, ২০২২-এ উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের কথায়। উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে রাম মন্দিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। তাই পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে যোগী আদিত্যনাথ যে মন্দির তৈরির সুফল পাবেন, তাতে সংশয় নেই। কিন্তু, ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদি কি এই সুবিধা পাবেন। সেটা এখনই বলে দেওয়াটা ধৃষ্টতা হবে। কারণ, আগামী সাড়ে চার বছরে গঙ্গা দিয়ে যেমন অনেক জল বয়ে যাবে। তেমনই রাজনীতিরে আঙিনাতেও অনেক পটপরিবর্তন হবে।
The post অযোধ্যা মামলার ঐতিহাসিক রায়, কী প্রভাব ভোট রাজনীতিতে? appeared first on Sangbad Pratidin.