সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। একবছর আগে আগস্ট মাসেই রাজনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়েছিলেন বাবুল। একে একে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব, সাংসদ পদ এবং বিজেপি ছেড়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালের আগস্ট যেন সবকিছুই দ্বিগুণ করে ফিরিয়ে দিল তাঁর কাছে। বুধবার রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি এবং পর্যটন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন বাবুল। বুঝিয়ে দিলেন তিনি আর রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড় নন, নন হাফ প্যান্ট মন্ত্রীও, বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) টিমের ভরসাযোগ্য উইঙ্গার হয়ে উঠেছেন তিনি।
২০১৪ সালে আসানসোল থেকে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন বাবুল। ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠও। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছিলেন সফলভাবে। নিজের সংসদ এলাকায় দুর্দান্ত পারফরম্যান্সও ছিল তাঁর। যার ফলস্বরূপ ২০১৯ সালে ভোট বাড়িয়ে আসানসোল থেকে দ্বিতীয়বার বিজেপি সাংসদ হন। কিন্তু তারপরেও মোদির মন্ত্রিসভায় পূর্ণ মন্ত্রিত্ব মেলেনি। উলটে বাংলার বিধানসভা ভোটে তাঁকে প্রার্থী করা হয়। তখন থেকেই রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল বাবুলের। পরে কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর মন্ত্রিত্বও। এই অপমান আর সইতে পারেননি বলিউডের জনপ্রিয় শিল্পী। ধীরে ধীরে রাজনীতি থেকে সরিয়ে নিতে থাকেন নিজেকে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অনেক চেষ্টা করেও সেই বরফ গলাতে পারেনি।
[আরও পড়ুন: নতুন মন্ত্রীদের দপ্তর বন্টন মুখ্যমন্ত্রীর, একাধিক দপ্তর বাবুলের, দায়িত্বে কাটছাঁট ফিরহাদের]
তারপর কিছুদিনের বিশ্রাম। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন বাবুলের। বাংলার রাজনৈতিক মাঠে তৃণমূলের হয়ে খেলতে নামেন তিনি। স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ‘রিজার্ভ বেঞ্চে নয়, প্রথম একাদশে থাকতে চাই।’ সেই একাদশের অংশ হয়ে উঠতে ঠিক সাড়ে দশ মাস অপেক্ষা করতে হল তাঁকে। বিধানসভা উপনির্বাচনে বালিগঞ্জ থেকে জিতে বিধায়ক। আর এই জয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই মমতার ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব হাসিল করে নিলেন বাবুল। তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সেনাপতি অভিষেকের ‘গুডবুকে’ রয়েছেন বালিগঞ্জের বিধায়ক। তাই তাঁকে রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে সোজা ‘উইঙ্গারের’ দায়িত্ব দিল দল।
এদিন মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বাবুল বলেন, “দিদি তো আছেনই। অভিষেকও পাশে থেকেছেন, সাহস জুগিয়েছেন, দলের অন্য বড় বড় নেতারাও পাশে থেকেছেন। ভগ্ন হৃহয় নিয়ে গত ৩ অগাস্ট রাত শেষ হয়েছিল। আজও ৩ অগাস্ট। আর কিছু বলব না।” সত্যিই তো, এক বছর আগের রাজনীতিতে ‘ফকির’ বাবুল তো আজ ‘রাজা’। মনে মনে হয়তো সেই রাজাই আজ আওরাচ্ছেন বলিউডের সেই হিট ডায়লগ, হার কে জিতনেওয়ালো বাজিগর কহেতে হ্যায়! রাজনীতির ময়দানের আজকের সেই বাজিগর হলেন রাজ্যের নয়া তথ্য প্রযুক্তি ও পর্যটন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।