চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: একুশের নির্বাচনের আগে দলবদল পর্বে আপাতত সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। সেই উত্তাপেই আরও এক দলবদলের ‘ভুয়ো’ খবর রটেছে। এবার উলটপুরাণ। তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা,মন্ত্রীরা যখন বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়ে সেই শিবিরেই পা রেখেছেন, সেসময় বিজেপির সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) নাকি তৃণমূলে (TMC) যোগ দিতে চলেছেন। এই খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই সত্যতা যাচাইয়ে নেমে পড়ছেন স্বয়ং বাবুল। পোস্টটা সম্পূর্ণ ‘ভুয়ো’ এবং তা তৃণমূলের আইটি সেলের কাজ বলে অভিযোগ তাঁর। সেইসঙ্গে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি স্পষ্ট করেছেন নিজের অবস্থানও।
ভাইরাল হওয়া পোস্টে দেখা যাচ্ছে, এক বাংলা নিউজ চ্যানেলের টেলিকাস্টের স্ক্রিনশটে রয়েছে ওই খবরটি। বাংলা নিউজ চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজে দাবি করা হয়েছে বিজেপি (BJP) সাংসদের তৃণমূলে যোগদানে কথা। যেখানে লেখা “তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়”। বিধানসভার প্রাক্কালে দলত্যাগের এই খবরে চাঞ্চল্য ছডিয়ে পড়ে। যেখানে দলগুলিতে ভাঙাগড়ার খেলা চলছে অনবরত, সেখানে এমন ঘটনা ঘটতেও পারে। এই ভাবনায় জোর চর্চাও শুরু হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: করোনা কাঁটায় কল্পতরু উৎসবেও কোপ, বন্ধ থাকবে কাশীপুর উদ্যানবাটি-দক্ষিণেশ্বর মন্দির]
জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিজেপি যোগদানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই শহরবাসী নতুন সমীকরণ জুড়ে নেয়। হয়ত জিতেন্দ্র বিজেপিতে যোগ দিলে বাবুল দল ছাড়তে পারেন। কারণ, জিতেন্দ্র দল ছাড়তেই বাবুল সুপ্রিয় স্পষ্ট নিজের মতামত জানিয়ে বলেছিলেন, জিতেন্দ্রকে বিজেপিতে নেওয়া হলে তিনি বিরোধিতা করবেন। দলকে বোঝাবেন, তাঁকে না নেওয়ার জন্য। ঠিক যেমনটা হয়েছে সুজাতা মণ্ডল খাঁয়ের ক্ষেত্রে।
[আরও পড়ুন: ভরদুপুরে শুটআউট নৈহাটিতে, আশঙ্কাজনক এক তৃণমূল সমর্থক]
এই পোস্ট ভাইরাল হতেই বাবুল সুপ্রিয়র কাছেও দিনভর ফোন আসে বলে তিনি জানান। শেষ পর্যন্ত ভাইরাল হওয়া ওই ভুয়ো পোস্ট নিয়ে জবাব দিতে আসরে নামেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ নিজেই। শনিবার নিজের ফেসবুকে ওয়ালে লিখে জানান, “তৃণমূল দলটাকে আমি মনেপ্রাণে ঘৃণা করি। রাজনীতি ছেড়ে দিলেও তৃণমূলে যোগ দেব না। এই ধরনের খবরের হেডিং কখনও হতে দেবো না।” এরপর তাঁর হুঁশিয়ারি, “তৃণমূল সরকারকে আরব সাগরে না ফেলা পর্যন্ত খোলা হাওয়ায় নিঃশ্বাস নিতে পারব না।” সুতরাং, ভাইরাল পোস্ট যে অসত্য এবং ভুয়ো, তা প্রমাণে বেশ বেগ পেতে হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে, তা বলাই বাহুল্য।