চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর খবরের জেরে অর্কেস্ট্রার বেতাজ বাদশা দুর্গা রানার হাল ফিরল। শনিবার থেকে শুরু হল তাঁর বাড়ির কাজ। কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় (Ujjal Chatterjee) ও আসানসোল (Asansol) পুরনিগমের পুরপ্রশাসক তথা বিধায়ক জিতেন্দ্র তেওয়ারি (Jitendra Tiwari) নির্মাণ কাজের শিলান্যাস করলেন। ডিসেরগড়ের বাড়ির সামনেই ছোট্ট মঞ্চ তৈরি করে ডি রানা তথা দুর্গা রানার গানের অনুষ্ঠান হয়। ওই মঞ্চেই গায়ককে সম্বর্ধনা জানানো হয় পুরনিগমের পক্ষ থেকে।
২৯ জুলাই সংবাদ প্রতিদিনে খবর প্রকাশিত হয়, “করোনা কেড়েছে জলসা, অর্কেস্ট্রার বেতাজ বাদশা এখন সিকিউরিটি গার্ড”। সেই খবর ভাইরাল হয়ে যায়। আগস্টের ২ তারিখে আসানসোল পুরনিগমের ততকালীন মেয়র তথা বর্তমান পুরপ্রশাসক জিতেন্দ্র তেওয়ারি দুঃস্থ শিল্পীর বাড়িতে যান। শিল্পীর সমস্যার কথা শোনেন। হাতে তুলে দিয়ে দেন ত্রাণ, আর্থিক সাহায্য। জিতেন্দ্র তেওয়ারি প্রতিশ্রুতি দেন, শিল্পীর দশ ফুট বাই দশ ফুটের ঘর মেরামত করে দেওয়া হবে ও শৌচালয় তৈরি করে দেওয়া হবে। সেই মত পুরনিগমের পক্ষ থেকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে অনুমোদন করা হয়। শনিবার সেই মতো শুরু হয় কাজ।
[আরও পড়ুন: ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর নতুন বাংলা পডকাস্ট চ্যানেল ‘শোনো’, গল্প-গান-নাটকের নয়া ঠেক]
উল্লেখ্য, আসানসোল, দুর্গাপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ধানবাদ, পাটনায় গায়ক দুর্গা রানাকে চেনেন না বা ‘ডি রানা নাইট’ অনুষ্ঠান হয়নি এমন কোন পাড়া কিংবা মহল্লা বাকি নেই। ২০১০ সাল পর্যন্ত চুটিয়ে শো করেছেন তিনি। বয়স ভারে কাবু হয়ে, ফাইলেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পায়ের ব্যথা নিয়েও জলসায় এখনও গান করতে যেতেন। কিন্তু করোনার (CoronaVirus) জেরে লকডাউনে বাড়িতে কোনও আয় নেই। স্থানীয় এক ফ্যাক্টরিতে নাইট গার্ডের কাজ করেই চলছিল তাঁর দিন। ফাইলেরিয়া বেড়ে যাওয়ায় সেই কাজটিও তিনি এখন করতে পারছেন না।
[আরও পড়ুন: ‘মৃত্যুর পর আমার সমস্ত সৃষ্টি ধ্বংস করা হোক’, ফেসবুকে ইচ্ছাপত্র প্রকাশ কবীর সুমনের]
পুরপ্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “ছোটবেলায় দুর্গাদার কত গান শুনেছি। তাঁর নাম শুনেই ছুটে যেতাম জলসায়। সেই শিল্পীর এই পরিণতির কথা জানতে পেরেই এখানে ছুটে আসি।” এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে দুর্গা রানা ফের গান ধরেন “আজ এই দিনটাকে মনের খাতায় লিখে রাখব”। “ভোলে ও ভোলে”র মত জনপ্রিয় গানেও মঞ্চ মাতিয়ে দেন। ছোট্ট এই সুরের আসরেই ধন্যবাদ জানান জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে।