সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথাতেই আছে ‘কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ’। আর বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারতের পরাজয় যেন বাংলাদেশের একাংশের কাছে পৌষ মাসের পার্বণের মতোই ঠেকেছে। এক সপ্তাহেও তাঁদের উল্লাসে ছেদ পড়েনি! বরং ঠাট্টা-মশকরা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। দুই বাংলার শিল্পীরা যখন কাঁটাতার, সীমান্ত পেরিয়ে সংস্কৃতির মেলবন্ধনের চেষ্টা করছেন, তখন পদ্মাপাড়ের একাংশ ভারতের হার নিয়ে একের পর এক কুরুচিকর আক্রমণ করেই চলেইছেন। এবার সেই প্রেক্ষিতেই নিজের দেশের সমালোচনায় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী (Chanchal Chowdhury)।
বাংলাদেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও অভিনেতার ‘হাওয়া’ গরম! অনুরাগীর অন্ত নেই। টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতেও একাধিক কাজ করেছেন চঞ্চল। সম্প্রতি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় মৃণাল সেনের বায়োপিকে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছেন। এবার প্রতিবেশী ভারতের হারে বাংলাদেশের এই অযথা উল্লাস নিয়ে আজ তক বাংলার কাছে চঞ্চলের মন্তব্য, “খেলাকে আর মানুষ শুধু মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখছে না। এটাই আমার খারাপ লাগার জায়গা। খেলাতে হার-জিত থাকেই, তবে সেটার ফলে এমন হিংসার ছবি প্রকাশ্যে আসা কাম্য নয়। বাংলাদেশে অনেক ভারত বিদ্বেষী আছে, এটা তো অস্বীকার করার জায়গা নেই। সে রাজনীতি হোক কিংবা খেলা। সবক্ষেত্রেই। এটা বাস্তব। সব দেশেই এমন থাকে। বাংলাদেশেও আছে।”
এর পাশাপাশি অভিনেতার সংযোজন, “তবে এটাই কিন্তু বাংলাদেশের সার্বিক চিত্র নয়। এখানে এরকম প্রচুর মানুষ ভারতের সিনেমা ভালোবাসে। মুক্তিযুদ্ধের অবদান মনে রাখে। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক নয়, তাদের পরিবার পরম্পরায় পাকিস্তানের পক্ষে। আর যাঁরা ভারত বিরোধী তাঁদের প্রত্যেকের কাছে জনে জনে গিয়ে তো আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয় যে, ভারতকে সাপোর্ট করো।” চঞ্চলের এহেন মন্তব্য ভাইরাল হতেই পদ্মাপাড়ে শোরগোল। সোশাল মিডিয়ায় অনেকে অভিনেতাকে কটাক্ষ করেছেন। কারও মন্তব্য, ‘আজকাল কলকাতায় কাজে যাচ্ছেন বলে নিজের দেশের নিন্দে করবেন?’ কেউ কেউ আবার তাঁর সিনেমা বয়কটের ডাকও দিয়েছেন। শিল্পীদের উপর এই বয়কটের ডাক অবশ্য নতুন নয়! এযাবৎকাল দুই দেশের তাবড় তারকারাই বয়কটের মুখে পড়েছেন। যদিও চঞ্চল চৌধুরী পালটা এপ্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু কেন এই বিদ্বেষ?
[আরও পড়ুন: OMG! এত দামে বিকোচ্ছে ‘অ্যানিম্যাল’-এর টিকিট, রণবীর কাপুরের ফিল্মি কেরিয়ারে রেকর্ড?]
এপ্রসঙ্গে চঞ্চল বলছেন, “একটা দেশে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ আছে। বাংলাদেশের বহু মানুষ এখনও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে। অনেকে আবার সমর্থনও করে। আবার ভারত বনাম পাকিস্তান খেলা হলে, অনেকে পাকিস্তানকেও সমর্থন করে। এমন নয় যে, বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষই ভারত বিদ্বেষী। এটা তো রাজনীতি বা খেলা সবক্ষেত্রেই হতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যারা ছিল, তারা হয়তো ভারত বিদ্বেষী। তাই এহেন আচরণ করেছে।”
অন্যদিকে, বাংলাদেশের এমন ‘বিকৃত’ উল্লাস নিয়ে মুখ খুলেছেন টলিউড অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তীও। ফেসবুক পোস্টে অভিনেতা ব্যঙ্গ করেই বললেন, “ইন্ডিয়া তো মোটে চারবার ওয়ার্ল্ডকাপ ক্রিকেট ফাইনালে উঠে দুবারই হেরে গেছে! মনে রাখবেন বাংলাদেশ কিন্তু কখনও ওয়ার্ল্ডকাপ ফাইনালে হারেনি! তাই তো ফাইনালে হার নিয়ে ঠাট্টা- মশকরাটা বেশ মানিয়ে যাচ্ছে! অনেকে কেন যে রেগে যাচ্ছে বুঝছি না।”