সুকুমার সরকার, ঢাকা: পুজোর মরশুমে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল বাংলাদেশ (Bangladesh)। ফলে টান পড়তে পারে বাজারে। শুধু খোকা ইলিশ নয়, সমস্ত ধরনের ইলিশ শিকারেই আগামী বাইশ দিনের জন্য বিধিনিষেধ জারি করেছে প্রশাসন। মাছের প্রজনন মরশুমের কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ বলে খবর।
বুধবার মধ্যরাত থেকে ২২ দিন চলবে ইলিশের প্রজনন মরশুম। এই সময় দেশের নদ-নদী সমুদ্রে জাল ফেলা, মাছ শিকার, বহন, মজুতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তাই মৎস্যজীবীরা আড়তদারের সঙ্গে হিসেব-নিকেশ শেষ করে বাড়ি ফিরছেন। একাংশের বক্তব্য, বেশিরভাগ মৎস্যজীবী এ বছর মহাজনের ঋণ শোধ করতে পারেননি। বুধবার রাত ১২টা থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশের প্রজনন মরশুম চলবে। ওই সময় সাগর থেকে ডিমওয়ালা ইলিশ (Hilsa) উঠে আসবে নদীতে ডিম ছাড়ার জন্য। তাই ভোলা-সহ ২০ জেলার নদ-নদীতে জাল ফেলা বা মাছ শিকার করা যাবে না। এই সময় বরফকল বন্ধ থাকবে।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বাড়ছে চিনের প্রভাব! মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গলায় আশঙ্কার সুর]
জানা গিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও মৎস্য বিভাগ সরেজমিনে কাজ করবে। এই সময় দেশের কয়েক লক্ষ নিবন্ধিত মৎস্যজীবীকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। নিষেধাজ্ঞা সফল করতে দেশের প্রতি জেলা-উপজেলার মাছঘাটে প্রচার চালানো হবে। মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, এ বছর তাঁরা আশানুরূপ ইলিশ পাননি। সাগরে-নদীতে দৌড়ঝাঁপ করেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ আসেনি। ইলিশের আকাশছোঁয়া দাম উঠলেও মহাজনের ঋণ শোধ করতে পারেননি মৎস্যজীবীরা। হিসেব-নিকেশ শেষে মহাজনের ঋণ ঘাড়ে বয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
উল্লেখ্য, পুজোর মরশুমে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার ফলে বাজারে জোগান ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে আরও চড়তে পার দামও। বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশে ২০০৩-২০০৪ সাল থেকেই খোকা ইলিশ (স্থানীয় ভাষায় জাটকা) রক্ষার কর্মসূচি শুরু করা হয়। তখন থেকেই ধীরে ধীরে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। ২০০৮ সাল থেকে প্রথম আশ্বিন মাসে পূর্ণিমার আগে ও পরে মিলিয়ে ১১ দিন মা ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তখন থেকেই এর সুফল মিলতে শুরু করে।