সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) ক্রমেই দাপট বাড়ছে মাদক পাচারকারীদের। পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী নিহত হলেও রমরমিয়ে চলছে পাচারচক্র। এহেন পরিস্থিতিতে ৩০টি ইয়াবা ট্যাবলেট-সহ গ্রেপ্তার এক ব্যক্তিকে সাজা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
[আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা, ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখল বাংলাদেশ হাই কোর্ট]
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর গেণ্ডারিয়া থানা এলাকায় এসকে দাস রোড থেকে ৩০টি ইয়াবা-সহ রাজিব হোসেন রাজু নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে গেণ্ডারিয়া থানার আধিকারিক মহম্মদ সাজ্জাদুজ্জামান মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। গেণ্ডারিয়া থানার এস আই রাশেদুল আলম ওই বছরের ২৭ নভেম্বর রাজুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিলে আদালত তার বিচার শুরু করে। গত রবিবার শুনানি শেষ হলে রবিবার ঢাকার একটি আদালত রাজুর সাজা ঘোষণা করে। অত্যন্ত অভিনব পন্থা অবলম্বন করে দোষীকে মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ার নির্দেশ দেন বিচারক বেগম মাহমুদা। পাশাপাশি, দোষী তরুণকে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা দেখা এবং পাঁচটি গাছ রোপণের আদেশও দিয়েছেন তিনি। আসামী রাজুকে ‘একাত্তরের দিনগুলি’, ‘একাত্তরের চিঠি’ এবং নৈতিকতার ওপর প্রকাশিত দুটি বই পড়তে বলেছেন বিচারক। পাশাপাশি তাকে মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত সিনেমা ‘আগুনের পরশমণি’ দেখতে বলা হয়েছে।
এই অভিনব রায়ের সমর্থনে সরকার পক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, “কোনও আসামীকে শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্য তাকে সংশোধন করা। সংশোধনের জন্যই বিচারক তার রায়ে এই নির্দেশ দিয়েছেন।” প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে (Bangladesh) লাগাতার চলছে মাদক বিরোধী অভিযান। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পাচারচক্র ভেঙে দিতে অত্যন্ত তৎপর হয়েছে প্রশাসন। কিন্তু এরপরও মায়ানমার থেকে দেশে ঢুকছে মাদক। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে গোটা দেশে মাদক বিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় এপর্যন্ত চারজন মহিলা-সহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৫১ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৯৩ জন রোহিঙ্গা (Rohingya) নাগরিক। এই মুহূর্ত বাংলাদেশে রয়েছে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী। রাখাইন প্রদেশে বার্মিজ সেনার হামলায় বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়ছে তারা। তবে আশ্রয়প্রার্থী হয়ে এতদিন বাংলাদেশে ছিল যে রোহিঙ্গারা, আজ তারাই হয়ে উঠেছে মাথাব্যথার কারণ৷ মাদক কারবার থেকে শুরু করে খুন-ডাকাতি, বিদেশী কিশোরী-যুবতী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে এরা।