সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনার মারে বেসামাল বাংলাদেশ (Bangladesh)। পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের অভাবে ধাক্কা খাচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি। মারণ ভাইরাসের দাপট এতটাই বেশি যে ঢাকায় গণকবর খোঁড়া হচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে সংক্রমণের গতি রুখতে ফের লকডাউনের মেয়াদ বাড়াল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।
[আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ভারতের সঙ্গে চাপানউতোর, এবার চিনের দ্বারস্থ বাংলাদেশ]
দেশে করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে যাওয়ায় আরও এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ থাকবে। তবে মুদিখানা খোলা থাকবে। ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করবে। কিন্তু গণপরিবহণ ৫ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ভারতে অক্সিজেনের সংকট দেখা দেওয়ায় সে দেশের সরকার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই কারণে বাংলাদেশে এখন আর কোনও অক্সিজেন ভারত থেকে আসছে না। এদিকে করোনায় বিপর্যস্ত ভারতের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে আমেরিকা। আর তাই কোভিশিল্ড টিকা তৈরির কাঁচামাল পাঠাচ্ছে দেশটি। এই খবর চাউর হতেই বাংলাদেশে খুশির হাওয়া বয়ে গিয়েছে। ঢাকায় একাধিক সূত্র জানায়, উৎপাদন বাড়লেই ভারত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বাংলাদেশে রপ্তানি করবে। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাঁচামাল না পাঠানোর সিদ্ধান্তে ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে সিদ্ধান্ত বদল করে কাঁচামাল পাঠানোর কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এদিকে, করোনার মারে বাংলাদেশে হু হু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে কোদাল দিয়ে কবর খুঁড়ে শেষ করতে না পেরে এক্সকাভেটর দিয়ে গণকবর খুঁড়ে রাখা হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ঢাকার রায়েরবাজার কবরস্থানে আসা মৃতের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ।করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারিত ৮ নম্বর ব্লকে একপাশেই খুঁড়ে রাখা হয়েছে অন্তত ২৫টি কবর। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্রে খবর, এই কবরস্থানটিতে দিনে গড়ে করোনায় মৃত ৮ থেকে ১০টি দেহের সৎকার করা হচ্ছে। গত বছরের ২৭ এপ্রিল থেকে রায়েরবাজার কবরস্থানে করোনায় মৃতদের সমাহিত করা শুরু হয়। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় এক বছরে কবর দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ১১৭ জনকে।