সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের বাংলাদেশের এলিট ফোর্স ‘র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন’ বা র্যাব-কে নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনে র্যাবকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘে ১২টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন চিঠি দিয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যাঁ পিয়েরে ল্যাকরোইক্সকে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে খবর। বৃহস্পতিবার এই চিঠির বিষয়টি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের আন্দোলন দমনে পুলিশের ব্যাপক প্রহার, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় উত্তাল বাংলাদেশ]
জানা গিয়েছে, ওই চিঠিতে সই করেছে-অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান ফেডারেশেন এগেনস্ট ইনভলান্টারি ডিসাপিয়ারেন্সেস (এএফএডি), এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম- এশিয়া), এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এএনএফআরইএল), ক্যাপিটল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, সিভিকাস: ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, রবার্ট এ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস এবং দ্য অ্যাডভোকেটস ফর হিউম্যান রাইটস এবং ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন এগেইনস্ট টর্চার (ওএমসিটি)।
এদিকে র্যাবকে প্রশ্নবিদ্ধ করার বিষয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন যারা র্যাব তৈরি করেছিলেন, এখন তারাই র্যাবের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। বৃহস্পতিবার ঢাকায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উদ্যোগে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সংক্রান্ত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “র্যাব সৃষ্টি কোন সময় হয়েছিল এটা সবাই জানে। যারা র্যাব সৃষ্টি করেছে তারাই র্যাবকে নিয়ে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। র্যাব যে ভালো কাজ করছে, এগুলো তাদের চোখে পড়ছে না। র্যাব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, ভেজাল বিরোধী অভিযানে কাজ করছে, জলদস্যু মুক্ত করল, জঙ্গি দমন ও সন্ত্রাসমুক্ত করল, এগুলো তারা বলছে না।”
র্যাবের সমর্থনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খান আরও বলেন, “যারা মানবাধিকারের কথা বলে আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, এমন কোনও দেশ নেই যেখানে এনকাউন্টার নেই। পুলিশ বাহিনীর দিকে কেউ যদি অস্ত্র তুলে ধরে থাকে, তাহলে সেখানে পুলিশ বাহিনী তো নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকতে পারে না। তখনি এই সমস্ত ফায়ারিংয়ের ঘটনা ঘটে। এগুলো সবই যদি এলিট ফোর্স ও র্যাবের ঘাড়ে দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আমি মনে করি তাদের বিরুদ্ধে অবিচার হবে। বাংলাদেশের পুলিশকে বিশ্বমানের করার কাজ এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের পুলিশকে সেই পর্যায়ে আমরা নিয়ে গিয়েছি।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ নভেম্বর রাষ্ট্রসংঘের আন্ডার সেক্রেটারিকে এই চিঠি পাঠান এই ১২টি সংস্থা।এর আগে গত ১০ ডিসেম্বরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) প্রাক্তন ও বর্তমান সাত আধিকারিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও বিদেশ দপ্তর।