সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে সেনা অভিযানের ফলে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। তারপর থেকে তাদের ফেরত পাঠানোর নানা চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। এই পরিস্থিতির হাত থেকে উদ্ধার হতে ভারতকে এগিয়ে আসার আবেদন জানাল ঢাকা। শনিবার এই আবেদন জানান বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। ভারতের পাশাপাশি এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলিকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: ক্রিকেট থেকে দূরে, কাঁকড়া চাষ শুরু করছেন শাকিব]
ঢাকা থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজারের ইনানীর একটি হোটেলে দুদিন ধরে ‘ভারত-বাংলাদেশ নবম বন্ধুত্বপূর্ণ বৈঠক’ হয়। শনিবার সন্ধেয় এই বৈঠকের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. এ কে আবদুল মোমেন। সেখানে বক্তব্য রাখার সময় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ভারতকে সাহায্য করার অনুরোধ জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার এই বোঝা আমরা দীর্ঘদিন ধরে বহন করতে পারি না। এই সমস্যা আমাদের একার নয়। এই সমস্যা সমাধানে ভারত-সহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। ১১ লাখ রোহিঙ্গা চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই মানবিকতা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।’
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম পেরোল ১৫০ টাকার গণ্ডি, গৃহস্থের পকেটে টান]
এই মন্তব্যের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও ভারত এক সঙ্গে কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, বাংলাদেশ সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশে স্থান নেই। কোন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের জমি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
আর দুদিন ধরে চলা বৈঠক সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত নবম বন্ধুত্বপূর্ণ বৈঠকে সীমান্তবর্তী নদীর জল বন্টন, তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সমুদ্র অর্থনীতি-সহ পারস্পরিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে ব্যবসা ও বাণিজ্যে ভারসাম্য আনার ক্ষেত্রে দু’দেশেরই কাজ করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব সংলাপ উভয় দেশের সম্পর্কে নব দিগন্তের সূচনা করেছে। বন্ধুত্ব সংলাপ এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে মতবিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশ পারস্পরিকভাবে লাভবান হতে পারে। এমনিতেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক
গভীর এবং বিশ্বাসের। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে যার সূচনা হয়েছিল। দুই দেশের সুদীর্ঘ এই সম্পর্ক আগামীতে আরও গভীর হবে।
শনিবারের এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতের রাজ্যসভা সদস্য এম জে আকবর, বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ও আশেক উল্লাহ রফিক, ফ্রেন্ডস বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান চ্যাপ্টারের সভাপতি ড. রাধাতমাল গোস্বামী, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজের চেয়ারম্যান এবং ফ্রেন্ডস বাংলাদেশেক প্রধান সমন্বয়ক আসম শামছুল আরেফিন।
The post রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতকে এগিয়ে আসার আবেদন ঢাকার appeared first on Sangbad Pratidin.