shono
Advertisement

ফোর্ট উইলিয়ামে সম্মাননা বাংলাদেশের, বিজয় দিবসে স্মৃতিমেদুর শহিদদের পরিবার

১২ জন শহিদের পরিবারের হাতে সম্মাননা তুলে দিল বাংলাদেশ সরকার। The post ফোর্ট উইলিয়ামে সম্মাননা বাংলাদেশের, বিজয় দিবসে স্মৃতিমেদুর শহিদদের পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 08:50 PM Dec 16, 2018Updated: 08:50 PM Dec 16, 2018

অর্ণব আইচ: বাবার কথা ভাল করে মনে নেই মৌসুমির। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন অসমের মোহনবাড়ির কাছে হেলিকপ্টার ভেঙে পড়েছিল, তখন তাঁর বয়স পাঁচ বছর। সেই হেলিকপ্টারের ভিতর ছিলেন তাঁর বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট হিমাংশু ঠাকুর। হাতে সম্মাননা নিয়ে বাবার স্মৃতিকেই হাতড়ে চলেছেন তিনি।

Advertisement

[দূষণে দিল্লি-বেঙ্গালুরুকে টেক্কা তিলোত্তমার]

সম্মাননা হাতে নিতে গিয়ে চোখে জল শহিদ সেনা জওয়ান জ্ঞানচাঁদের স্ত্রী প্রেমাবতী দেবীর। তিনি শুনেছিলেন, বাংলাদেশের আতাপুরে তাঁর স্বামী জ্ঞানচাঁদ ছিলেন পাক সেনাদের বাঙ্কারের অদূরে। বাঙ্কার থেকে হেভি মেশিনগান দিয়ে ক্রমাগত গুলি চালাচ্ছে পাক সেনা। জানতেন ঝুঁকি অনেক। তবু হাতে লাইট মেশিনগান নিয়েই হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন জ্ঞানচাঁদ। শত্রুসেনাদের মেশিনগানের বুলেট ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু মৃত্যুর আগে তাঁর লাইট মেশিনগানের গুলি ফুঁড়ে দিয়েছিল পাঁচজন পাক সেনার বুক। মৃত্যু হয়েছিল তাদেরও। নাতির কাঁধে ভর দিয়ে চলতে চলতে তিনিও হাতড়ে চলেছেন স্বামীর স্মৃতি।

এখনও বৃদ্ধা অপর্ণা দেবীর মনে পড়ে যেদিন তাঁর স্বামী এনসিসি ক্যাডেট শিবধর তিওয়ারির ডাক পড়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে। স্ত্রী ও বালক পুত্রকে বারাণসীতে ছেড়ে পেটি অফিসার হয়ে যোগ দিয়েছিলেন ভারতীয় নৌসেনায়। বিশাখাপত্তনম ছেড়ে তাঁদের যুদ্ধজাহাজ রওনা হয়েছিল বাংলাদেশের জলসীমার দিকে। কিন্তু তার আগেই ধ্বংস হয়ে যায় তাঁদের জাহাজ। শহিদ হন শিবধর। যদিও অপর্ণা দেবী তাঁর স্বামীর দেহ আনতে যেতেও পারেননি। গিয়েছিল বালক পুত্র। পরে সেই পুত্রকেও হারিয়েছেন তিনি। সম্বল বলতে নাতি।

[অর্চনা পালংদার হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হোটেল ম্যানেজার]

প্রত্যেকটি ঘটনাই ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ঘটেছিল। ভারতীয় সেনাদের এই লড়াই স্বাধীন করেছিল বাংলাদেশকে। কিন্তু শহিদ হয়েছিলেন বহু ভারতীয় সেনা। এর পর পেরিয়ে গিয়েছে ৪৭ বছর। রবিবার ভারতীয় সেনাদের ‘বিজয় দিবস’-এ ফোর্ট উইলিয়ামে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ১২ জন শহিদের পরিবারের হাতে সম্মাননা তুলে দিল বাংলাদেশ সরকার। এদিন ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দপ্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি এদিন মুক্তিযুদ্ধের ১২ জন ভারতীয় শহিদের পরিবারের হাতে সন্মাননা তুলে দেন। তাঁদের মধ্যে সাতজন সেনাবাহিনীর, দু’জন বায়ুসেনা, একজন নৌসেনা ও দু’জন বিএসএফ-এর। এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই ভারতীয় শহিদদের পরিবারের হাতে সন্মাননা তুলে দিয়েছিলেন। এর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, মুক্তিযুদ্ধে নিহত অন্য শহিদদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে সম্মাননা। বাংলাদেশের তরফে জানানো হয়, বাংলাদেশে ১০ একর জমির উপর মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাদের স্মারক স্তম্ভ তৈরি করা হবে। এদিন ফোর্ট উইলিয়ামের বিজয় স্মারকে মাল্যদান করে শহিদদের সম্মান জানান ইস্টার্ন কমান্ডের জিওসি-এন-সি লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম এম নারাভানে। ছিলেন সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা ও নৌসেনার অন্য পদস্থ কর্তারাও।

The post ফোর্ট উইলিয়ামে সম্মাননা বাংলাদেশের, বিজয় দিবসে স্মৃতিমেদুর শহিদদের পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement