সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘হক চাচা’ বা মুক্তিযোদ্ধা মজিবুল হক নাকি রাজাকার! এমনটাই বলছে বাংলাদেশে সদ্য প্রকাশিত রাজাকারদের তালিকা। তারপর থেকেই সামনে এসেছে একর পর এক অসংগতি। ফলে, শেষমেশ চাপের মুখে ওই তালিকা প্রত্যাহার করেছে সরকার।
বুধবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক জানান, আপাতত রাজাকারদের তালিকাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। মন্ত্রকের ওয়েবসাইট থেকে ওই তালিকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত রবিবার, বা ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রক ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের নামের তালিকা প্রকাশ করে। সকলকে অবাক করে ওই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নামও চলে আসে। এতে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। তারপরই এই তালিকা সংশোধন করে নতুন করে প্রকাশের নির্দেশ দেন হাসিনা। ইতিমধ্যে এই বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, “এই তালিকাটি ১৯৭১ সালে করা। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে সংগ্রহ করেছি মাত্র। এতে কোনও কিছু পরিবর্তন করা হয়নি।” তবে হক সাফাই দিলেও, থামছে না সমালোচনা। অনেকেরই মত, সঠিকভাবে তথ্য খতিয়ে না দেখেই প্রকাশ করা হয়েছিল তালিকাটি।
[আরও পড়ুন: ভারতকে কড়া বার্তা বাংলাদেশের, নদী সংক্রান্ত বৈঠক বাতিল করল ঢাকা]
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রক প্রকাশিত রাজাকারদের তালিকায় নাম উঠেছে বঙ্গবন্ধু মুজবর রহমানের আত্মীয় আবদুল হাই সেরনিয়াবাতের নাম। বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাই আবদুল হাই সেরনিয়াবাতের নাম রাজাকারদের তালিকায় দেখে অবাক পরিবারের লোকজন। ওই তালিকায় নাম উঠেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘হক চাচা ‘ মজিবুল হকের। অথচ হক চাচা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে তৎকালীন বরগুনা মহকুমা মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন। রাজাকারের তালিকায় আগুন দিয়েছেন বরিশালের মুক্তিযোদ্ধা ও আইনজীবী তপন কুমার চক্রবর্তী। মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর অশ্বিনীকুমার হলের সামনে এই প্রতিবাদ জানান তিনি। এর আগে রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) বরিশাল জেলা শাখা।
The post চাপের মুখে রাজাকারদের ‘ত্রুটিপূর্ণ’ তালিকা প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ appeared first on Sangbad Pratidin.