সুকুমার সরকার, ঢাকা: কঠোর লকডাউনের (Lockdown) মধ্যে বাংলাদেশে পোশাক ও শিল্প কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে আগস্টের ১ তারিখ থেকে। আর তার জেরেই করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে গুরুতর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের (Bangladesh) স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। রবিবার দুপুরে রাজধানী ঢাকার মহাখালীর বিসিপিএস মিলনায়তনে প্রথম বর্ষের MBBS ক্লাসের (২০২০-২১) উদ্বোধন করে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই আশঙ্কার কথা জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ”রবিবার থেকে গার্মেন্টস খুলে দেওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মানেননি। ফলে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আমার আশঙ্কা। জীবনের জন্য জীবিকার দরকার হয়। সরকারকে সবকিছুই ভাবতে হয়।
আগামী এক সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে করোনা টিকার (Corona vaccine)আওতায় নিয়ে আসা হবে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ”আগামী ৭ আগস্ট থেকে করোনা টিকার ক্যাম্প করা হবে। টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা লাগবে না। ভোটার আই কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে গেলেই হবে। যাদের কার্ড নেই তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেওয়া হবে।” অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলি নূর সকলেই বক্তব্য পেশ করেন।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে Rohingya সন্ত্রাসবাদীদের হামলা, আতঙ্ক ছড়াল কক্সবাজারে]
এদিকে করোনা টিকা নিয়ে আশ্বাসের মাঝেও ত্রস্ত দেশবাসী। লকডাউন চলাকালীনই ১০ দিন বাদে হঠাৎ পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় ইদের পর যে সব পোশাককর্মী গ্রামে চলে গিয়েছিলেন, তাঁরা ইতিমধ্যে ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। ঢাকামুখী মানুষের ঢল ছিল অস্বাভাবিক। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় যে যেভাবে পেরেছেন, সেভাবেই ঢাকায় ফিরেছেন। কেউ পিকআপে চড়ে, কেউ ট্রাক বা ইঞ্জিনচালিত ভ্যানে, কেউ বা রিকশায় বাড়ি থেকে রওনা হয়েছেন। এঁদের অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। স্বাস্থ্যবিধির ধার ধারেননি কেউই।
[আরও পড়ুন: Lockdown-এর মাঝেও বাংলাদেশে খুলে গেল কলকারখানা, কাজে যোগ দিতে শহরে ফেরার ভিড়]
এতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, সংক্রমণ আরও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। রাজধানী ঢাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের ৮০ শতাংশই গ্রাম থেকে এসেছেন। সেই গ্রামের মানুষ এখন ছুটছেন রাজধানীর দিকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চললে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এখনই সরকারি-বেসরকারি কোনও হাসপাতালে ICU বেড খালি নেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সামনে মহাবিপদ। দেশে টানা সাতদিন ধরে করোনা ভাইরাসে ২০০-র উপরে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহের হিসাবে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে গত সপ্তাহেই।