সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারত বিরোধিতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে চলেছে 'নতুন' বাংলাদেশ। পাকিস্তান থেকে জাহাজে করে পণ্য আমদানির পর এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের পড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হল। ইউনুস সরকারের একের পর এক পদক্ষেপ ও পাক ঘনিষ্ঠতা চাপ বাড়াচ্ছে ভারতের।
২০১৫ সালে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত সিন্ডিকেট সভায় ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে যেতে পারবে। পাকিস্তানের সঙ্গে শিক্ষা, সংস্কৃতি-সহ নানা বিষয়ে বিনিময় করতে পারবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ সোমবার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পর, বাংলাদেশের পাক ঘনিষ্ঠতায় পথে এই পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক বলেছিলেন, পাকিস্তান ১৯৭১ সালে টানা ৯ মাস ধরে এ দেশে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা চালিয়েছে। এবং তা অস্বীকার করেছে। যতদিন না পাকিস্তান গণহত্যা, হত্যা ও নির্যাতনের কথা স্বীকার করবে ততদিন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে এ প্রতিষ্ঠান কোনো ধরনের সম্পর্ক রাখবে না। নতুন করে আমাদের কোনো শিক্ষার্থী পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার জন্য যাবে না। একইভাবে তাদের কোনো ছাত্রও আমরা গ্রহণ করব না। ২০১৫ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার পর এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সায়মা হক বিদিশা জানান, একটা সময় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছিল। আমাদের যেহেতু এটা আকাডেমিক প্রতিষ্ঠান। ফলে অনেকে স্কলারশিপ নিয়ে কিংবা কনফারেন্সে যোগ দিতে যেতে চায়। সেই বিষয়টি বিবেচনা করে আমরা সভায় আলোচনা করে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অবশ্য ইউনুস শাসনে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা যে ক্রমশ বেড়ে চলেছে তার একাধিক উদাহরণ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সব রকম বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছিল হাসিনা সরকারের আমলে। তবে অতীতের সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে প্রথমবার পাকিস্তান থেকে জাহাজে পণ্য আমদানি করেছে ঢাকা। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন ভারত। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এবার বাংলাদেশকে হাতিয়ার করে ভারতকে অশান্ত করতে পারে পাকিস্তান। কাশ্মীরের মাটিতে যেভাবে জঙ্গিদের ব্যবহার করা হচ্ছে সেই একই ছকে ভারতের পূর্বাঞ্চলে ছড়ানো হতে পারে অশান্তির আগুন। বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় এবার বাংলাদেশে সরাসরি অস্ত্র পাঠাতে পারে আইএসআই। এর মাঝে শিক্ষা ক্ষেত্রে দুই দেশের কাছাকাছি আসা ভারতের জন্য একেবারেই ভাল বার্তা নয়।