সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশকে (Bangladesh) কাছে পেতে মরিয়া চিন। ভারতের প্রভাব খর্ব করার উদ্দেশ্যে ঢাকার জন্য ঋণের পসরা সাজিয়েছে বেজিং। একইসঙ্গে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে বেশ কয়েকটি চিনা বাণিজ্যিক সংস্থা। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল করে স্থানীয়দের সঙ্গে বারবার সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে তারা। এবার স্থানীয় মানুষের উপর হামলার অভিযোগ উঠল চিনা কর্মীদের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে মানববন্ধন তৈরি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন হয় বাংলাদেশে।
[আরও পড়ুন: ‘বিদেশের গণমাধ্যমে দেশের সঠিক ছবি তুলে ধরুন’, OCAB সম্মেলনে আবেদন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রীর]
জানা গিয়েছে, পিরোজপুর জেলার মাথাবারিয়ায় একটি বাঁধ নির্মাণ করছে এক চিনা সংস্থা। চলতি মাসের ১ তারিখ জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিবাদের জেরে বাঁধ নির্মাণের কাজ বন্ধ করার দাবি তোলেন স্থানীয়রা। তারপরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। প্রতিবাদী জনতার উপর চড়াও হয় ওই প্রকল্পে কর্মরত চিনারা। শুধু তাই নয়, এলাকার বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে বাঁধ প্রকল্পে হামলা চালানোর অভিযোগও দায়ের করে ওই হামলাকারীরাই। এই ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের শাস্তি ও ভুয়ো মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে নারয়ণগঞ্জ জেলার পাগলায় মানববন্ধন তৈরি করে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ’। ওই প্রতিবাদে যোগ দেন কয়েকশো মানুষ।
চিনা দূতাবাসকে বিক্ষোভকারীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “আপনাদের ইঞ্জিনিয়ার, কর্মী-সহ সমস্ত নাগরিকদের সতর্ক করে দিন এমন ঘটনা যাতে ফের না ঘটে।” প্রতিবাদীদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সমস্যা তৈরি করছে চিনা সংস্থাগুলি। তাদের মাথায় শুধু ব্যবসা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে চিনা সংস্থাগুলির কর ফাঁকি সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি ঘটনা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। বিশেষ করে, দেশে পরিকাঠামো নির্মাণে জড়িত ‘চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কার্পোরেশন’ (CRBC) সংস্থাটির অ্যাকাউন্টে অসঙ্গতি নজরে আসে। বলে রাখা ভাল, এই সংস্থাটির মালিকানা রয়েছে চিনের সরকারি সংস্থা ‘চায়না কমিউনিকেশনস কন্সট্রাকশান কোম্পানি’র হাতে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সরকারি পরিকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের জন্য কোর ফাঁকি দিয়ে কাঁচামাল আমদানি করেছে সংস্থাটি। এর ফলে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে রাজকোষের।
তবে চিনা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই চিনা সংস্থা ‘তিয়ানইয়ে আউটডোর কো লিমিটেড’ (TOCL) বিরুদ্ধে কর ফাঁকির মামলা প্রকাশ্যে আনে চট্টগ্রামের শুল্ক আধিকারিকরা। ওই চিনা সরকারি সংস্থাটির বিরুদ্ধে প্রায় ২১ কোটি টাকার কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। তুলো আমদানির নামে লুকিয়ে বিদেশি সিগারেট আনার অভিযোগও রয়েছে সংস্থাটির বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, দেশের রাজশাহী ডিভিশনে আউটডোর ক্যাম্প, পোশাক তৈরির ব্যবসা রয়েছে TOCL-এর। সবমিলিয়ে বংলাদেশে চিনের অভিপ্রায় সবার কাছে স্পষ্ট।