সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা আবহে বাংলাদেশে ম্লান শারদোৎসব। উৎসবের মরশুমে সংক্রমণ রুখতে এবার দুর্গাপুজোয় জারি হয়েছে একাধিক বিধিনিষেধ। এবার পুজোয় প্রসাদ বিতরণ ও শোভাযাত্রা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ধর্ষণের সাজা ফাঁসি, মন্ত্রিসভার প্রস্তাবে সই করে অধ্যাদেশ জারি রাষ্ট্রপতির]
গত ১২ অক্টোবর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য-১ অধিশাখার উপসচিব ড. মহম্মদ শিব্বির আহমদ ওসমানি স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গাইডলাইন মেনে চলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাইডলাইনে বলা হয়েছে- মন্দির প্রাঙ্গণে নারী-পুরুষের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ পৃথক ও নির্দিষ্ট থাকতে হবে। পুজোমণ্ডপে আগত ব্যক্তিবর্গ নির্দিষ্ট দূরত্ব (কমপক্ষে দুই হাত) বজায় রেখে লাইন করে সারিবদ্ধভাবে প্রবেশ করবেন এবং প্রণাম শেষে বের হয়ে যাবেন। সম্ভব হলে পুরো পথ পরিক্রমা গোল চিহ্ন দিয়ে নির্দিষ্ট করতে হবে। পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং ভক্তের সংখ্যা অধিক হলে একাধিকবার পুষ্পাঞ্জলির ব্যবস্থা করতে হবে। পূজামণ্ডপে আগত সবার মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। মাস্ক ছাড়া কাউকে মণ্ডপে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। মন্দিরের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য থার্মাল স্ক্যানারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে কেউ মণ্ডপে প্রবেশ করবেন না। হাঁচি ও কাশির সময় টিস্যু রুমাল বা কনুই দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকতে হবে। ব্যবহৃত টিস্যু বর্জ্য ফেলার জন্য পর্যাপ্ত ঢাকনাযুক্ত বিনের ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং জরুরিভাবে তা অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা/ধুনচি নাচ এবং শোভাযাত্রা থেকে বিরত থাকতে হবে। ধর্মীয় উপাচার ছাড়া অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোকসজ্জা বর্জন করতে হবে। পূজামণ্ডপে একজন থেকে আরেকজনের নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। প্রয়োজনে বসার স্থানটি নির্দিষ্ট করে দিতে হবে যাতে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিফলিত হয়। স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এসব নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করতে হবে বলে গাইডলাইনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত বলেন, “আমরা গত ২৬ আগস্ট এ নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা এবার শারদীয় দুর্গোৎসবে স্বাস্থ্যবিধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সাত দফা প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। তার প্রেক্ষিতেই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এই নির্দেশ দিয়েছে। প্রতিমা তৈরি থেকে পুজো সমাপ্তি পর্যন্ত প্রতিটি মন্দিরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভক্ত-পূজারি ও দর্শনার্থীদের জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখা, সবার বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, দর্শনার্থীদের মধ্যে ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, পুজোমণ্ডপে নারী-পুরুষের যাতায়াতের আলাদা ব্যবস্থা করা, বেশি সংখ্যক নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রাখার কথা বলা হয়েছে এসব নির্দেশনায়।