সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) অব্যাহত মৌলবাদীদের তাণ্ডব। এবার ঠাকুরগাঁওয়ে একটি কালী মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভেঙে দিল দুষ্কৃতীরা। এর আগে কুষ্টিয়াতে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান ও বিপ্লবী বাঘাযতীনের প্রতিকৃতিতে হামলা চালিয়েছিল ধর্মান্ধরা।
[আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে চুক্তি সত্বেও চিনের করোনা টিকা পরীক্ষায় সম্মতি দিতে পারে বাংলাদেশ]
পুলিশ সূত্রে খবর, দেশের উত্তর জনপদ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে শ্বশানঘাটের কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুষ্কৃতীরা। রবিবার রাতে উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের কিসমত সৈয়দপুর ইলুয়া পুকুর শ্বশানঘাট কালী মন্দিরে এ ঘটনা। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, গতকাল রাতে কীর্তন গাইতে যাওয়ার সময় ওই কালী মন্দিরে প্রণাম জানাতে যায় তারা। এ সময় তারা মন্দিরের কালী প্রতিমাটি মাথা ভাঙা অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয়দের খবর দেন তারা। মন্দিরের সভাপতি জিতেন চন্দ্র রায়ের অভিযোগ, মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই বিষয়ে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রদীপ কুমার রায় জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। এর আগে, গত শুক্রবার বিকেলে পীরগঞ্জ পৌর শহরের পূর্ব চৌরাস্তায় নির্মিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙার চেষ্টা করে এক ব্যক্তি। এ সময় পুলিশ হাতেনাতে তাকে আটক করে। তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতায় আইনে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসে কুষ্টিয়ার শাপলা চত্বরে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়। এনিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ।ওই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত মৌলবাদী সংগঠন হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে সরব হন মুক্তমনারা। ভাষ্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেওয়ার দায়ে দেশের তিন শীর্ষ মুসলিম ধর্মীয় নেতা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মহম্মদ জোনায়েদ ওরফে জুনায়েদ বাবুনগরী ও সৈয়দ ফয়জুল করিম এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নেতা মাওলানা মহম্মদ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাও করা হয়। শুধু তাই নয়, বিপ্লবী বাঘাযতীনের মূর্তিতেও হামলা চালানো হয়। দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামা, মাশায়েখ ও মুফতিরা যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন ফের ভাস্কর্য তৈরির বিরোধিতা করেছেন। ওই উগ্র মৌলবাদীদের বক্তব্য, ‘মানুষ বা অন্য যে কোনও প্রাণীর ভাস্কর্য অথবা মূর্তি নির্মাণ, স্থাপন ও সংরক্ষণ পূজার উদ্দেশ্যে না হলেও সন্দেহাতীতভাবে কঠোরতম অপরাধ। আর যদি পূজার উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে তা স্পষ্ট ধর্মবিরোধী আচরণ। এ ধরনের শরিয়ত বিরোধী কাজ মুসলমানদের জন্য অনুসরণযোগ্য নয়। যারা বলছেন মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয়, তারা ভুল বলছেন। সত্য গোপন করছেন।’ সব মিলিয়ে বাংলাদেশে উগ্র ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা জোরদার করে তুলেছে বিভিন্ন মুসলিম মৌলবাদী সংগঠন ও শক্তিগুলি।