সুকুমার সরকার, ঢাকা: এখনও বেইরুট বিস্ফোরণের ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি লেবানন। আর্থিক মন্দা ও করোনা মহামারীর মাঝে বন্দর শহরের বিস্ফোরণে তছনছ হয়ে গিয়েছে দেশটির অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতে বিপাকে পড়েছেন সে দেশে কর্মরত লক্ষাধিক বাংলাদেশি শ্রমিক।
[আরও পড়ুন: ‘ঘুষিতে মুখ ভেঙে দিতে ইচ্ছে করছে’, সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে ফের বিতর্কে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট]
গত আগস্ট মাসের চার তারিখ প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় লেবাননের রাজধানী বেইরুট। ওই ঘটনায় প্রাণ হারান প্রায় ১৫০ জন মানুষ। আহত হন প্রায় ছয় হাজার। সেই সঙ্গে গৃহহীন হয় পড়েন কয়েক লক্ষ মানুষ। এই বিস্ফোরণের পর দেশটিতে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। গণআন্দোলনের জেরে জাতীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত লেবানন থেকে ৫৬৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে ১২০ জন মহিলা এবং ৪৪৪ জন পুরুষ। করোনার কারণে গত পাঁচ মাস ইচ্ছা থাকলেও অনেকে ফিরতে পারেননি।
বেইরুটে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে খবর, লেবাননে প্রায় দেড় লক্ষ বাংলাদেশি নাগরিক কাজ করেন। এর মধ্যে ৬০ হাজার মহিলা কর্মী। মহিলারা নিখরচায় লেবাননে কাজের সুযোগ পেলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে সোয়া এক লক্ষ টাকা খরচ হয়। মন্দার আগে দেশটিতে বাংলাদেশের মহিলা শ্রমিকদের গড় আয় ছিল ২৫০ ডলার। সে দেশে বাংলাদেশি মহিলা কর্মীরা মূলত বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। বিশ্লেষকদের মতে, লেবাননের অর্থনীতি মূলত বিদেশে থাকা সে দেশের নাগরিকদের রেমিট্যান্স বা প্রবাসীদের আয়ের আর পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। অন্তত দুই কোটি লেবানিজ থাকেন বিশ্বের নানা প্রান্তে। ডলারের দরপতনের কারণে প্রবাসী আয়ে ধাক্কা লেগেছে। আর করোনা সংক্রমণের কারণে পর্যটনের ভরা মৌসুমেও খাঁ খাঁ করছে পুরো লেবানন। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের উপার্জনে। তাই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে দেশে ফিরে আসতে চাইছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: OMG! ইন্দোনেশিয়ায় দূতাবাস ভবন বিক্রিতে দোষী সাব্যস্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত]
The post অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, বেইরুট বিস্ফোরণে বিপাকে বাংলাদেশি শ্রমিকরা appeared first on Sangbad Pratidin.