সুকুমার সরকার, ঢাকা: টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মাঝে নাফ নদীতে পণ্যবাহী বড় নৌকার উপর হামলা চালাল মায়ানমার। সে দেশের সীমান্ত থেকে গুলিবৃষ্টি করা হয়। এনিয়ে ঢাকার তরফে মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বিদেশমন্ত্রকে ডেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত মায়ানমারের রাষ্ট্রদূত ইউ কিয়াও সোয়ে মোয়ের কাছে এনিয়ে প্রতিবাদ লিপি হস্তান্তর করা হয়। শাসকদল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক তথা সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকায় দলের এক সভায় বলেছেন, ''আক্রান্ত হলে ছেড়ে দেব না।''
টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মাঝে নাফ নদীতে পণ্যবাহী নৌকায় গুলিবর্ষণ মায়ানমার থেকে।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ''সেন্ট মার্টিনে মায়ানমারের (Myanmar)গোলাগুলি নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। যুদ্ধ পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে এবং চলবে। তবে আক্রান্ত হলে জবাব দেওয়া হবে।’’ রোহিঙ্গা (Rohingya) সমস্যা বাংলাদেশের উপর কীভাবে জাঁকিয়ে বসেছে, তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) উদারভাবে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। এজন্য তাঁকে মানবতার মা বলা হয়। এখন বিশ্বের বড় বড় দেশ ও সংগঠনগুলো এজন্য আমাদের প্রশংসা করে, লিভ সার্ভিস দেয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে যে সাহায্য তার পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছে।'' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘‘মায়ানমারের সরকারের সঙ্গে আরাকান আর্মি যুদ্ধ করছে। যুদ্ধটা বেশ কিছুদিন ধরে হচ্ছে। আমরা দেখেছি আরাকানের অনেক জায়গা তারা দখল করে নিয়েছে। এখন আমাদের নাফ নদীর নিচের অংশে যুদ্ধ চলছে। এখানে যখন যুদ্ধ চলছে, তখন কোন সময় কার গুলি আসছে, বলা যাচ্ছে না।’’
[আরও পড়ুন: স্ত্রীকে ফেরাতে তারাপীঠে তন্ত্রসাধনা! সিভিক ভলান্টিয়ারের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে চাঞ্চল্য]
এদিকে বাংলাদেশ (Bangladesh) লাগোয়া মায়ানমারের সীমান্তে চলা হিংসাত্মক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB) ও কোস্ট গার্ড। এনিয়ে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘মায়ানমার সীমান্তে যে হিংসা হচ্ছে, তার জন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্ট গার্ড আছে। তারা বিষয়টি তদারকি করছে। আমরা, সেনাবাহিনীও প্রস্তুত আছি। পরিস্থিতি খারাপ হলে বা অন্যদিকে গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশে যদি বহিঃশত্রু আক্রমণ করে, তা প্রতিহত করা হবে।’’ এনিয়ে আবার বিরোধী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ''সেন্ট মার্টিনে গোলাগুলি হচ্ছে। মায়ানমারের যুদ্ধজাহাজও সেখানে দেখা যাচ্ছে। এটা বাংলাদেশের জন্য হুমকি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, এ পর্যন্ত সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই সেন্ট মার্টিন ইস্যুতে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।''