সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সফরের আগেই সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় উত্তপ্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। এবার সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে আক্রান্ত সংখ্যালঘু হিন্দুরা। আর মৌলবাদীদের এই কাণ্ড চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখল পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সফরে মুখোমুখি মোদি-হাসিনা, ২৭ মার্চ ঢাকায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক]
জানা গিয়েছে, গত সোমবার মউলানা মামুনুল হক-সহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা দিরাই উপজেলা শহরে একটি সমাবেশে বক্তব্য দেন। তারপর ফেসবুকে হেফাজত নেতা মামুনুল হককে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্ট করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এর জেরে বুধবার সকালে আশপাশের চারটি গ্রামের কয়েক হাজার ধর্মান্ধ মানুষ জড়ো হয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে যায়। পরে সেখান থেকে শতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই গ্রামে হামলা চালায়। ঘটনার পর প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে এহেন ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও মামলা করা হয়নি। কাউকে গ্রেপ্তারও করেনি পুলিশ। অভিযোগ, হামলা চলাকালীন ধর্মান্ধ জনতার তাণ্ডব দাঁড়িয়ে দেখছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা। গতকাল দুপুরে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ আধিকারিকরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গ্রামে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন আছে। তবে গ্রামবাসীর আতঙ্ক কাটেনি। হামলার সময় বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়া পুরুষেরা বাড়িতে ফিরলেও অনেক ঘরে মহিলা ও শিশুরা ফেরেনি।
নোয়াগাঁওয়ে হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদারের বাড়ি। তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, গত মঙ্গলবার তাঁরা জানতে পারেন যে গ্রামের ছেলে ঝুমন দাস ফেসবুকে হেফাজত নেতাকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট করেছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর রাতেই গ্রামবাসীরা ঝুমন দাসকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বিষয়টি নিয়ে এরপর প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে ওই চার গ্রামের লোকজনের সঙ্গে আলোচনাও হয়। কিন্তু পরের দিন বুধবার সকালে কয়েক হাজার লোক সংঘবদ্ধ হয়ে হঠাৎ করে তাঁদের গ্রামে হামলা চালায়। অন্তত ৯০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে লুটপাট চালানো হয়। ভেঙে ফেলা হয় দেবদেবীর মূর্তি। অনেকেই মনে করছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের আগে দেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা উসকে দিতে চায় মৌলবাদীরা। এর জন্য দু’টি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি করার চেষ্টা করছে তারা।