সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিপদ আরও বাড়ছে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তাঁকে দ্রুত গ্রেপ্তারির জন্য বাংলাদেশ পুলিশকে ইন্টারপোলের সাহায্য নিতে নির্দেশ দিল আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত। বলা হয়েছে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত হাসিনার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করতে হবে। আর সেই মর্মে ইন্টারপোলকে আবেদন জানাক বাংলাদেশ পুলিশ। সরকারি আইনজীবী জানান, যুদ্ধাপরাধ আদালতের নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যে ইন্টারপোলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে সংরক্ষণের বিরোধিতায় শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন দমনে হাসিনা প্রশাসনের ভূমিকাকে ভালো চোখে দেখেনি আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত। আন্দোলন রুখে দিতে গণহত্যার নির্দেশ-সহ একাধিক মানবতা বিরোধী পদক্ষেপের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল হাসিনা প্রশাসনের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে। এই তালিকায় ছিলেন খোদ শেখ হাসিনা, আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের-সহ ৪৬ জন। আগস্টের ৫ তারিখ ক্ষমতাচ্য়ুত হয়ে ভারতে চলে আসেন হাসিনা। গত ১৭ নভেম্বর তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। রবিবার প্রধান আইনজীবী তথা জামাত-ই-ইসলামির নেতা মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আদালতে সওয়াল-জবাবের সময় জানান, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। তাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। তিনি আবেদন জানান, আদালত যেন হাসিনাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলের কাছে রেড কর্নার নোটিস জারির আর্জি গ্রহণ করে সেইমতো নির্দেশ দেন।
এরপর যুদ্ধাপরাধ আদালতের বিচারপতিরা বাংলাদেশ পুলিশকে এনিয়ে তৎপরতার নির্দেশ দেন। যদিও আইনজীবীদের একাংশের মত, অনেক নামী ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধেই ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস রয়েছে। কিন্তু নোটিস জারি হলেই যে গ্রেপ্তার করা যাবে, তেমনটা নয়। এক্ষেত্রে ভারত সরকার হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে তুলে দেবে, তা নাও হতে পারে। আরেকাংশের অবশ্য বক্তব্য, ইন্টারপোল রেড কর্নার নোটিস জারি করলে চাপে পড়বে ভারতও। সেক্ষেত্রে হাসিনার প্রত্যর্পণ হয়ত তত কঠিন হবে না।