সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাঙালির আজ কান্নার দিন। আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট। জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত ও বেদনার দিন। জাতীয় শোক দিবস আজ। জাতি আজ যথাযথ মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে শোকদিবস পালন করছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন বাহিনীর একটি সশস্ত্র দল গার্ড অফ অনার দেয়। এর আগে ঢাকার বনানী কবরস্থানে মা-ভাই-বউদিদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। তারও আগে ভোর সাড়ে ৬টায় ধানমান্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৫ সালের এই ১৫ আগস্টই বাংলাদেশ হারিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-সহ (Mujibur Rahman) তাঁর পরিবারের ১৮ সদস্যকে। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর পাঁচ বছর ভারতে কাটিয়ে দেশে ফিরেছিলেন হাসিনা ও রেহানা। দেশে ফিরেও স্বস্তি পাননি শেখ হাসিনা। তাঁর প্রাণনাশের জন্য ঘাতকরা বোমা-গ্রেনেড হামলা, জনসভায় বোমা পুঁতে রাখা, প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ১৮ বার প্রাণনাশের চেষ্টা চালায়।
[আরও পড়ুন: ‘দিদি জানে আমি নির্দোষ’, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে পেয়ে খুশি অনুব্রত]
২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি দীর্ঘ ৩৪ বছর পর সেই কলঙ্ক থেকে জাতির দায়মুক্তি ঘটে। কর্নেল ফারুখ-সহ পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়। বিদেশে পলাতক অপর পাঁচ খুনিকে দেশে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ আদালতের ফাঁসির রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত। সেই বঙ্গবন্ধুর আজ ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। আজ সরকারি ছুটি। জাতীয় শোক দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) পাশাপাশি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আব্দুল হামিদও।
১৯৭৫ সালের এই ১৫ আগস্ট ধানমান্ডির ৩২ নম্বরের ৬৭৭ নম্বর বাড়িটির চারপাশে তখনও ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষা। বাড়িটি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের। এমন পরিবেশে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ঘটাতে বাড়িটি লক্ষ্য করে দক্ষিণ দিক থেকে শুরু হয় ভয়াল আক্রমণ। ঘাতকের নির্দয় বুলেটে সপরিবারে মৃত্যু হয় বঙ্গবন্ধুর। প্রাণ হারান তাঁর বাড়ির সদস্যরা। মৃত্যুর আগে তাঁর জীবন বাঁচাতে বঙ্গবন্ধু ফোন করেছিলেন রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব কর্নেল জামিল আহমেদ, এসবি অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে। তাঁরা ছুটে এসেছিলেন। তাঁদেরকেও হত্যা করা হয়। সেই দিনটিই বাংলাদেশে শোকদিবস হিসেবে পালিত হয়।